রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, ৮টি কেন্দ্রে প্রতিদিন ৪০ হাজার করে শিশু শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে। শুধু তাই নয় টিকাদান কর্মসূচীকে বেগবান করতে প্রতিদিন দেশজুড়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টিকার জায়গায় ১০ লাখে উন্নীত করার কাজ চলমান রয়েছে। যা খুব অল্পদিনের মধ্যেই শুরু হবে। তবে এখনই ১২ বছরের নিচে টিকা দেয়া হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
সোমবার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত শিশু শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধনকালে জাহিদ মালেক আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতা অনেক ভাল। আমরা একদিনে ৮০ লাখেরও বেশি টিকা দিয়েছি। এই সক্ষমতা আমাদের আছে। আমাদের নিয়মিত টিকা কার্যক্রম চলমান আছে। প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ মানুষকে টিকা দিয়ে থাকি। এখন আরও ৪০ হাজার শিক্ষার্থী যুক্ত হলো। ৪০ হাজার কেন, ৪ লাখ যুক্ত হলেও আমরা সেটা দিতে পারব। আমাদের তার জন্য জনবল, টিকা, ব্যবস্থা সবই আছে। প্রয়োজন হলে আরও বাড়াব। মন্ত্রী বলেন, ফাইজারের ৯৬ লাখ টিকা পেয়েছি, হাতে আছে আরও ৮২ লাখ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তারা আগামীতে আরও ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেবে। উপজেলা পর্যায়েও ফাইজারের টিকা দেয়া হবে। এর মধ্যে ১৪ লাখ ডোজ দেয়া হয়েছে। হাতে থাকা ৮২ লাখ ডোজ শিক্ষার্থীদের দেয়া হবে। আরও বেশকিছু টিকা পাইপলাইনে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) বলছে, তারা আগামীতে ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেবে। সেগুলো দিয়ে পর্যায়ক্রমে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিশুদেরও টিকা দেয়া হবে। সারাদেশের সব শিক্ষার্থীর টিকা দেয়ার জন্য তিন কোটি ডোজ টিকা প্রয়োজন হবে। এ সময় মন্ত্রী জানান, ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের জটিলতা কেটেছে। আগের তুলনায় দ্বিগুণ আল্ট্রা লো ফ্রিজার (অতি সংবেদনশীল) আছে। তাই, গ্রামেও টিকা দিতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি। তাই, সবার টিকার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
জাহিদ মালেক বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২১ কোটি টিকা ক্রয় করেছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমেও টিকা পেয়ে যাচ্ছি। সেখানেও প্রায় ৭ কোটি টিকার প্রতিশ্রæতি আছে। কাজেই টিকার অভাব হবে না। এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তোমরা টিকা পেয়ে যাবে। পড়াশোনায় মনোযোগী হও। স্কুলে আসো কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। সংক্রমণ কিন্তু টিকা রোধ করতে পারে না।শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মোঃ লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ খুরশীদ আলম, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার।
রাজধানীর যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা দেয়া হবে সেগুলো হলো- হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাউথপয়েন্ট স্কুল এ্যান্ড কলেজ, চিটাগং গ্রামার স্কুল, আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, মিরপুর কমার্স কলেজ, কাকলি হাইস্কুল এ্যান্ড কলেজ, সাউথ ব্রিজ স্কুল এবং স্কলাসটিকা স্কুল।