বিডি ঢাকা ডেস্ক
বাউফলের কালাইয়া বন্দরের বিশিষ্ট মুদি ও মনোহরী ব্যবসায়ী শিবা নন্দ রায় শিবু বনিককে (৭৬) অপহরণের ৪৮ ঘন্টার পর উদ্ধার করা হয়েছে। বাউফলসহ জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ অভিযান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে উদ্ধার করে। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে সড়কের পাশে মুখবাধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ঘটনার মাস্টারমাইন্টকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ঝালকাঠি সদর থানার বালিগোনা গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের মোঃ আকবর শরীফের ছেলে মাসুদ শরীফ(২৪), বাউফলের নাজিরপুর ইউনিয়নের তাঁতেরকাঠি গ্রামের মিন্টু মৃধার ছেলে মোঃ মিরাজ মৃধা(২০), বাবুল প্যাদার ছেলে মোঃ জাহিদ প্যাদা(২৭),গকুল চন্দ্র মিস্ত্রীর ছেলে বিধান চন্দ্র মিস্ত্রী (২২) ও ভোলা জেলার দক্ষিন আইচা থানার পাচুকিয়া ৪নং ওয়ার্ডের জাকির সিকদারের ছেলে মোঃ মাহফুজ সিকদার (১৬)।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে নগদ ১লাখ ৩৫ হাজার ৬শ ৮০ টাকা, বেশ কিছু ধারালো অস্ত্র,৪টি এ্যানড্রোয়েট মোবাইলসহ ৩টি বাটন মোবাইল ফোন, জ্যাকেট, জুতা, মাক্স ও মানকি ক্যাপ উদ্ধার করা হয়। তবে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে ওই মাস্টারমাইন্টের (মূলহোতা) নাম প্রকাশ করেননি। তবে মূল পরিকল্পনাকারী একটি বহুজাতিক কোম্পানির এসআর হিসাবে চাকরী করেন। এ ঘটনার আগে তার বাসায় গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করে কর্মপরিকল্পনা ও দায়িত্ব বন্টন করে দেন। অপহরণের কাজে ব্যবহৃত ট্রলারটি চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের একজনের কাছ থেকে ভাড়া করা হয়।
আজ সোমবার দুপুর দেড়টায় বাউফল থানার কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য দেন পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) সাজেদুল ইসলাম সজল, বাউফল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফ মুহাম্মদ শাকুর, বাউফল থানার ওসি মোঃ কামাল হোসেন প্রমূখ।
পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, অপহৃত শিবা নন্দ বনিককে দুইদিন একটি নির্জন পরিত্যাক্ত বাসায় আটকে রাখার পর পরিবারের কাছে ১ কোটি টাকা মুক্তিপন দাবি করে অপহরণকারীরা। মূলত কোটিপতি হওয়ার নেশায় তারা ব্যবসায়ী শিবা নন্দ রায় বনিককে অপহরণ করার পরিকল্পনা করেন। এর আগেও তাকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সুযোগের অভাবে তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি গ্রেপ্তারকৃতরা।
বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুর রহমান জানান, গত শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে ৮-১০ জনের অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা কালাইয়া মার্চেন্টপট্রি এলাকায় শিবা নন্দ রায় শিবু বনিকের দোকানে হানা দিয়ে তার দুই কর্মচারী তাপস ও শংকরকে হাত-পা বেধে মুখে স্কসটেপ পেচিয়ে নগদ ৫ লাখ টাকাসহ ব্যবসায়ী শিবা নন্দ রায় শিবু বনিককে পিছনের দরজা দিয়ে খালপাড়ে নিয়ে একটি ট্রলারযোগে চলে যায়। এ ঘটনার পর শনিবার শিবু বনিকের স্ত্রী কৃষ্ণা রায় বনিক বাউফল থানায় একটি ডাকাতি ও অপহরণের মামলা দায়ের করেন।