শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন

‘চাহিবামাত্র’ চিকিৎসকদের আইডি কার্ড প্রদর্শনের আহ্বান :স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১
  • ১৮৫ বার পঠিত

নিজস্ব সংবাদদাতা : ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ চলাকালে সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে সঙ্গে পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) রাখা এবং ‘চাহিবামাত্র তা প্রদর্শন’ করার আহ্বান জানিয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা চেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বুধবার (২১ এপ্রিল) দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে অনলাইনে স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের (এনসিডিসি) পরিচালক মোহাম্মদ রোবেদ আমিন।

রোবেদ আমিন বুলেটিনে বলেন, বর্তমানে লকডাউনের মধ্যে সড়কে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। যেকোনো চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। পরিচয়পত্র, যেকোনো ধরনের আইডি কার্ড প্রদর্শনকারী স্বাস্থ্যকর্মীকে সহানুভূতির সঙ্গে সহযোগিতা করা এবং দ্রুত ও বাধাহীন চলাচলের সুবিধা প্রদান করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি নৈতিক দায়িত্ব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র করোনাকালে চিকিৎসকদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এই মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের দুর্ভোগ কমানো চেষ্টা করছেন তারা। জীবন বাজি রেখে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে গত এক বছরের ১৪০ চিকিৎসকসহ এক হাজারের অধিক স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন। তাদের নিজের মৃত্যু ছাড়া তাদের পরিবারের মৃত্যুর কারণ ছিল তারাই। এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।

গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনে ঘরের বাইরে যেতে মুভমেন্ট পাস নেয়ার শর্ত আরোপ করেছে পুলিশ। তবে চিকিৎসকদের এই পাস নিতে হবে না বলে জানানো হয়েছে। তবে পাস না থাকায় বিধিনিষেধের প্রথম দিন এক চিকিৎসককে জরিমানা করা হয় পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও। আরেকজন চিকিৎসককে ‘কসাই’ সম্বোধন করার অভিযোগ উঠেছে।

পরদিন ঢাকা মহানগর পুলিশ সেই চিকিৎসককে ডেকে জরিমানার অর্থ ফেরত দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আর আলোচনা হয়নি। তবে পঞ্চম দিন বেশ কয়েকটি ঘটনায় চিকিৎসকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যাল এলাকায় গাড়িতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার, গায়ে অ্যাপ্রোন থাকার পরেও এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গে তর্কে জড়ান নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এ কাইয়ুম। ওই চিকিৎসক অভিযোগ করছেন, তাকে ভুয়া ডাক্তার বলা হয়েছে। এমনকি অবৈধ যৌন ব্যবসার অভিযোগ গ্রেপ্তার শামীমা নূর পাপিয়ার সঙ্গে তার তুলনা করা হয়েছে।

এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, তাকে কর্মস্থলে দিয়ে আসার পর বাসায় ফেরা গাড়িকে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি চালককে তার পরিচয়পত্র দিয়ে দিয়েছিলেন। সেটি দেখানোর পরও পুলিশ কর্মকর্তা তা মানতে চাননি। গাড়ি চালক ফোনে তাকে ধরিয়ে দিলে সেই পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, বেশি কথা বললে ছয় মাসের জেল দেয়া হবে।

এরপর চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে চিঠি দিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, এভাবে চলতে থাকলে রোগীদের সেবা দেয়া ব্যাহত হবে।

বিএমএ এও বলেছে যে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সব চিকিৎসকের পরিচয়পত্র নেই। এই সংখ্যাটি মোট চিকিৎসকের অন্তত ৬০ শতাংশ। এমনকি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদও মনে করেন, এলিফ্যান্ট রোডের সেই ঘটনায় পুলিশ বাড়াবাড়ি করেছে। তিনি বলেছেন, গাড়িতে স্টিকার ও অ্যাপ্রোন থাকার পরেও পরিচয়পত্র দেখাতে বলার দরকার ছিল না।

তবে পুলিশদের দুই সংগঠন পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন এই ঘটনায় ওই চিকিৎসকের দায় দেখেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানানো হয়েছে বিবৃতি দিয়ে। এ ঘটনা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্ট এই পাল্টাপাল্টি বিবৃতি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com