নাটোর সংবাদদাতা : নাটোরে গাছ থেকে নিরাপদ আম সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গোপালভোগ জাতের গাছ থেকে আম নামানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণ।
শুক্রবার (২১ মে) দুপুরে জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার সালাইনগর এলাকায় একটি বাগানের গাছ থেকে আম সংগ্রহের উদ্বোধন করেন নাটোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহরিয়াজ।
এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার, বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াঙ্কা দেবি পাল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওহিদুল ইসলাম গকুল, উপজেলা কৃষি অফিসার মোমরেজ আলীসহ আম বাগান মালিক উপস্থিত ছিলেন।
পরে রাসায়নিক পদার্থের অপব্যবহার রোধ করে পরিপক্ক ফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ফল উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করতে বাগাতিপাড়া ইউএনও প্রিয়াঙ্কা দেবী পালের সভাপতিত্বে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে ডিসি বলেন, করোনার সংক্রমণ রোধ করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দেশীয় সুস্বাদু ফল আম এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ফল চাষিদের ফল সংগ্রহ এবং এর বিপণন ও পরিবহন কার্যক্রমে কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে জেলা প্রশাসন তা নিরসন করবে। বিশেষ ট্রেন ও ডাকযোগে ব্যবসায়ীরা রাজধানীতে আম পাঠাতে পারবেন। ফলের আড়ত এবং বাগানগুলোতে প্রশাসনিক মনিটরিং ব্যবস্থা চলমান থাকবে। এছাড়া অপরিপক্ক আম পাড়া কেউ যেন বাজারজাত করতে না পারেন সেজন্য বাগানগুলো নজরদারি রাখা হয়েছে।
এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ, কষের মাধ্যমে পচন রোধ ও পরবর্তীকালে গাছে কুশি বের হওয়ার সুবিধার জন্য বোটাসহ আম পাড়তে হবে। জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ক্ষতিকর স্প্রে থেকে বিরত থাকাসহ ব্যাগিং পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
এর আগে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ গত ০৪ মে আম উৎপাদকদের অংশগ্রহণে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় জেলায় আম ও লিচু সংগ্রহ কার্যক্রমের সময়-সূচি নির্ধারণ করে দেন। সময়-সূচির শুরুতে ১০ মে থেকে স্থানীয় গুটি জাতের আম সংগ্রহ শুরু হলেও প্রসিদ্ধ জাতের গোপালভোগ ২০ মে থেকে সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে।
সময়-সূচিতে ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ ও রাণীপছন্দ, ২৮ মে থেকে ক্ষীরসাপাত, ০৫ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে মোহনভোগ, ২০ জুন থেকে আম্রপালি, হাড়িভাঙা ও ফজলি, ৩০ জুন থেকে মল্লিকা, ১০ জুলাই থেকে বারি-৪, ১৫ জুলাই থেকে আশ্বিনা জাতের আম এবং সর্বশেষ ১৫ আগস্ট থেকে গৌড়মতি আম সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই সময়-সূচির বাইরে আগে কোনো জাতের আম ও লিচু গাছে পরিপক্ক হলে উপজেলা কৃষি বিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কৃষক বা ব্যবসায়ী গাছ থেকে আম সংগ্রহ করতে পারবেন।
এদিকে নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন, চলতি বছর নাটোরে ৫ হাজার ৮৫৭ হেক্টর জমিতে ১৩টি জাতের আমের উৎপাদন হয়েছে। এতে ৮০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।