
বিডি ঢাকা ডেস্ক
নেছারাবাদের ঐতিহ্যবাহী সাগরকান্দা বাজার ও শতবর্ষী পাঁচটি রেইনট্রি গাছ নদীভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সাগরকান্দা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বাংলার “সুইজ খাল” নামে পরিচিত গাবখান নদীর তীরে অবস্থিত এই প্রাচীন হাট ও গাছগুলো রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে জোর আহ্বান জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাগরকান্দা হাট নেছারাবাদের অন্যতম প্রাচীন হাট, যার ইতিহাস প্রায় এক শতাব্দীরও বেশি পুরোনো। হাটের পাশে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল রেইনট্রি গাছগুলো এ হাটের সৌন্দর্য ও পরিবেশের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সাম্প্রতিক নদীভাঙনে গাছগুলোর গোড়া নদীতে ধসে যাচ্ছে, ফলে যেকোনো সময় এগুলো নদীতে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এই হাট থেকে সরকার প্রতিবছর প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করে। হাটের চারপাশে নদীভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ এবং শতবর্ষী গাছগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এই অঞ্চলের পরিবেশ, ঐতিহ্য ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. রুবেল আল মামুন বলেন,বাজারের গাছগুলো আমাদের পূর্বপুরুষের হাতে রোপণ করা। এগুলো শুধু গাছ নয়, আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। ইতিমধ্যে বাজারের অনেকাংশই নদীতে ভেঙে গেছে। নদীভাঙনের কারণে গাছগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে। আমরা চাই সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এই গাছ ও ঐতিহ্যবাহী হাটকে রক্ষা করুক। প্রয়োজনে এলাকাবাসীও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
একইভাবে, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর সদস্য মো. জিয়াউদ্দিন তৌহিদ বলেন,সাগরকান্দা হাট আমাদের দাদাদের সময় থেকে গড়ে ওঠে এবং ওই গাছগুলোও তাঁদেরই লাগানো। এমনকি হাটের জায়গাও আমাদের রেকর্ডীয়। প্রয়োজনে আমরা আরও জায়গা ছাড়তে রাজি। হাট ও গাছ উভয়ই সরকারি সম্পদ। যদি দ্রুত নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে শতবর্ষের ঐতিহ্য বিলীন হয়ে যাবে—নষ্ট হবে হাটের সৌন্দর্য ও পরিবেশ।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন,বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। পরিদর্শনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাছ ও হাট রক্ষায় যথাসম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।