রাজশাহীতে পরিযায়ী পাখি শিকার করে ভিডিও প্রচারকারী দুই ব্লগার আল-আমিন ও তুলির দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি, পরিযায়ী অতিথি পাখি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও নওদাপাড়া আমচত্ত্বর এলাকাস্থ বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর অদূরে মেসার্স জি এম ফিলিং স্টেশন এর পাশের বিশাল আকৃতির পুকুরটির ভরাট বন্ধ, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
আজ ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ইং, সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ-ইয়্যাস’র সভাপতি মো. শামীউল আলীম শাওন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক যৌথ স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক স্মারকলিপি রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার ও রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি কে প্রদান করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে আল-আমিনের ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে সে তার বাসার স্পেশাল গেস্টকে তার হাতে থাকা ৫টি পরিযায়ী পাখি রোস্ট করে খাওয়ার কথা বলছেন। অপরজন তুলি, তিনি তার ৫৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে বলছেন তার বাবা তার জন্য রাতে বিল থেকে ঐ পাখিটি ধরে নিয়ে এসেছেন।
তারা এভাবে প্রকাশ্যে পরিযায়ী পাখি ধরার প্ররোচনা ও জবাই করে রোস্ট করে খাওয়ার প্ররোচনা করেছেন যা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর সু-স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ আইন অনুযায়ী কোন ব্যক্তি উল্লিখিত কোন পাখি বা পরিযায়ী পাখির ট্রফি বা অসম্পূর্ণ ট্রফি, মাংস দেহের অংশ সংগ্রহ করিলে, দখলে রাখিলে বা ক্রয় বা বিক্রয় করিলে বা পরিবহন করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্তরূপ অপরাধের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩০ (ত্রিশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন এবং একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটাইলে সর্বোচ্চ ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
স্মারকলিপিতে প্ররোচনাকারী দুই ব্লগার আল-আমিন ও তুলির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা, পাখি/পরিযায়ী পাখি শিকারীদের আইনের আওতায় আনা ও নগরজুড়ে পাখির বিচরণকেন্দ্র ও আবাসস্থলকে সংরক্ষিত ঘোষণা করে সেখানে আলোদূষণ ও শব্দদূষণ রোধ কারার দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া আমচত্ত্বর এলাকায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর অদূরে মেসার্স জি এম ফিলিং স্টেশন এর পাশের বিশাল আকৃতির পুকুরটি উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগার উপর ভরাট করা হচ্ছে। একের পর এক পুকুর-জলাশয় ভরাটের ফলে রাজশাহীর অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়ছে। রাজশাহীতে চলমান সকল পুকুর ভরাট বন্ধ, সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের দাবি, বৈশ্বিক মানদন্ড অনুযায়ী নগরে শহরের মোট ভূমির ১০ থেকে ১২ শতাংশ এলাকা জলাশয় ও ১৫ শতাংশ বনভুমি নিশ্চিত করার দাবিসহ নানবিধ দাবি স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও একই দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক, প্রধান বন সংরক্ষক, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রাজশাহী, পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোয়ালিয়া কে প্রেরণ করা হয়েছে।