বিডি ঢাকা ডেস্ক
১৬ চাষে মুলা, তার অর্ধেকে তুলা, তার অর্ধেকে ধান আর বিনা চাষে পান। প্রচলিত এমন খনার বচনের সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে সরিষা। চলতি বছর শিবালয় উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন ফসলের মাঠে কোন ধরনের চাষ ছাড়াই কৃষকরা আবাদ করছে সরিষা। এ পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে আগাম ফসল ঘড়ে তুলে অধিক লাভবান হবেন কৃষক এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর।
সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত জুড়া ফসলের মাঠে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। যা কৃষকের মনে নতুন আশার স্বপ্ন জাগিয়েছে।
শিবালয়ের তেওতা আলোকদিয় চরাঞ্চলের কৃষক শফি উদ্দিন ফকির জানান, জমি থেকে আমন ধান কাটার পর বোরো বপনের আগ পর্যন্ত বিপুল পরিমান জমি জলমগ্ন হয়ে অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকে। জমি যাতে অলস পড়ে না থাকে সে লক্ষে স্থানীয় কৃষি বিভাগ আমাদের সরিষা চাষে উদ্ভুদ্ধ করলে আমরা তাদের দেখানো মতে সরিষা আবাদ শুরু করি। যা সকলের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অপর কৃষক আবেদালী জানান, আমন ধান কাটার ১৫ দিনের মধ্যে জমিতে সরিষা ছিটিয়ে দেয়ার কয়েক দিন পড়েই সরিষা গাছ সতেজ হয়ে উঠে। বিনা চাষে সরিষা আবাদে উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা বেশ স্বাচ্ছন্দ ভোগের পাশাপশি এরকম চাষাবাদেও বেশ মনোযোগী হয়েছে।
উপজেলার মহাদেবপুরের কাউয়ারবীল এলাকার কৃষক রফিকুল জানান, জমি নিচু হওয়া বর্ষার পানি শুকাতে বেশ সময় লাগে। এতে আমরা বছরে মাত্র দু-ফসল ঘড়ে তুলতে পারতাম। কৃষি বিভাগের দেখানো মতে বিনা চাষে সরিষা চাষ করায় আমরা এখন তিন ফসল পাচ্ছি। যার পুরোটাই আমাদের লাভ হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সুত্রে জানাযায়, দেশে বর্তমান প্রায় ১৬ লাখ টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। ঘাটতি পোষাতে ভোজ্য তেল আমদানী করা হচ্ছে। আগাম জাতের সরিষা এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ অব্যাহত থাকলে জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি দ্রæত সময়ে আমদানী নির্ভরতা কমে আসবে।
শিবালয় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রিজিয়া তালুকদার জনকন্ঠকে জানান, বিনা চাষে সরিষা আবাদে স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগীতা দেয়া হচ্ছে। এ উপজলায় চলতি মওসুমে প্রায় নয় হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে বিনা চাষে আবাদ হয়েছে ২২০ হেক্টর জমিতে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বেশ ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন তিনি।