বিডি ঢাকা ডেস্ক
চট্টগ্রামের দুইদিন যাবৎ আড়তে তালা দিয়ে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। প্রথমদিন নগরীর পাহাড়তলী বাজারের আড়তগুলো বন্ধ থাকলেও দ্বিতীয়দিন বন্ধ ছিল নগরীর অধিকাংশ পাইকারী প্রতিষ্ঠান। সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি সম্ভব না জানিয়ে পাইকাররা আড়ত বন্ধ রেখেছেন দাবি করলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জরিমানার ভয়ে অধিকাংশ ব্যবসায়ী তাদের প্রতিষ্ঠান খুলছেন না।
মঙ্গলবার নগরীর পাহাড়তলী ও স্টেশন রোডের সব ডিমের আড়ত বন্ধ ছিল। যার ফলে পুরো চট্টগ্রামজুড়ে ডিমের সংকট তৈরি হয়েছে। কয়েকটি পাইকারি প্রতিষ্ঠান অধিক দামে ডিম বিক্রি করলেও নগরীতে বেশিরভাগ আড়ত বন্ধ থাকায় বিপাকে খুচরা দোকানি ও সাধারণ ভোক্তারা। খুচরা ক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রায় এলাকায় প্রতি পিচ ডিম ১৬ থেকে ১৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রসঙ্গত সরকার উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দর নির্ধারণ করে। ওই হিসেবে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিমের দাম ১৪২ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে এখন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় ডিম বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আড়ত থেকে ডিম কিনতে হচ্ছে ডজনপ্রতি ১৬৫ টাকায়। এ অবস্থায় তাদের ১৮০ টাকায় বিক্রি না করলে খরচসহ লাভ উঠছে না। আড়তে ডিমের দাম বেশি হিসেবে পাইকারদের দাবি- উৎপাদন পর্যায় থেকে কর্পোরেট ও সরবরাহ প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি লাভ করছে এজন্যই অস্থিতিশীল বাজার।
পাইকার ও সরবরাহকারী এবং খুচরা বিক্রেতাদের পরস্পরের অভিযোগ-অনুযোগে ডিমের বাজার টালমাটাল। এমন পরিস্থিতির কারণে বিপাকে চট্টগ্রামের লাখ লাখ বাসিন্দা। গরীবের প্রোটিনের চাহিদা মেটানো জরুরি এ খাদ্যপণ্য নিয়ে শুধু সিন্ডিকেটের দোষ দিয়েই পার পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ এ বিষয়ে জোরদার কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার হচ্ছে না কেন প্রশ্ন নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তদের। অপরদিকে ভোক্তা অধিকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্ক ফোর্স অভিযান চালিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছে না ডিম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। ফলে অস্থির অবস্থা চারদিকে।
গত সোমবার চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে জৈনপুরী ট্রেডার্স ১ লাখ টাকা জরিমানা পরিশোধ করে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে। টাঙ্গাইল থেকে কম দামে ডিম কিনে নিজেরাই ভাউচার তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি করছিল তারা। এমন কারসাজি চট্টগ্রামের বেশিরভাগ পাইকারই করছে বলছেন তদারকি প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে মূল্য রশিদ না রেখে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল করে রেখেছে কতিপয় পাইকার। সর্বশেষ চট্টগ্রামের ষোলশহর এলাকায়ও অভিযান পরিচালনা হয়। কিন্তু কোনোভাবেই ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।