মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৫ অপরাহ্ন

মন্দিরে ব্যবহৃত খাস জমি দখল চেষ্টা, রাস্তায় হিন্দুরা দেড়শ বছরের টেংরাখালী মন্দির

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

নড়াইল সদরের দেড়শ বছরের টেংরাখালী-হাজরাতলা মন্দির প্রাঙ্গণের ৩ একর ৮ শতাংশ খাস জমি ব্যক্তির নামে দখল নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মন্দির চত্বরে রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে সমাবেশ করেছেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য ও রাজনৈতিক নেতারা। পরে এলাকার কয়েকশ মানুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন হয়।

টেংরাখালী মন্দিরটি সদর উপজেলার শিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের টেংরাখালী-হাজরাতলা এলাকায় অবস্থিত। এখানে মাঘি পূর্ণিমা তিথিতে দুদিনব্যাপী মেলায় ২০-২৫ হাজার মানুষ আসে। মন্দিরের মোট জমির পরিমাণ ১৩ শতাংশ। এছাড়া মন্দির সংলগ্ন খাস খতিয়ানভূক্ত ৪ একর ২৪ শতাংশ জমি প্রশাসনের সহযোগিতায় পূজা-অর্চনা ও মেলার কাজে ব্যবহার হয়। এর মধ্যে ৩ একর ৮ শতাংশ জমি জবদখল চেষ্টা করছেন পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের দুজন।

হাজরাতলা মন্দির কমিটির সভাপতি স্কুল শিক্ষক তপনকুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নড়াইল জেলা আহ্বায়ক কল্যাণ মুখার্জি, শিক্ষক উৎপলেন্দু বিশ্বাস, প্রভাষক প্রশান্ত সরকার, শিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কবির হোসেন মোল্যা, বিছালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম, সিঙ্গাশোলপুর ইউপি সদস্য মুশফিকুর রহমান, স্থানীয় বিএনপি নেতা ওমর ফারুকসহ অন্যরা।


  • খাস জমির ৩ একর ৮ শতাংশ জমিদারদের কাছ থেকে ‘দাখিলা মূলে’ কিনেছেন দাবি করে দখলের চেষ্টা
  • জমি বেদখল হলে মন্দির প্রাঙ্গণের দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা ও পূজা-অর্চনা বাধাগ্রস্থ হবে

সমাবেশের বক্তা, মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে স্থানীয় বাবু রাম নামে একজন মন্দিরের কাজে ব্যবহৃত খাস জমির ৩ একর ৮ শতাংশ জমিদারদের কাছ থেকে ‘দাখিলা মূলে’ কিনেছেন দাবি করে দখলের চেষ্টা করে। এতে এলাকার লোকজন বাধার মুখে পড়ে। এ ঘটনায় ১৯৯৩ সালে সরকারের পক্ষে মন্দির কমিটি থেকে বাবু রামের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এতে প্রথমে ১৯৯৯ সালে নিম্ন আদালতে হেরে গেলেও ২০০০ সালে বাবু রামের পক্ষে মামলার রায় আসে। তবে পরে সরকার পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করলে ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি ওই জায়গার ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।

এদিকে উচ্চ আদালতে মামলা থাকার পরও ২০০৬ সালে বাবু রামের কাকাতো ভাই শরৎচন্দ্র রায় সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা গ্রামের ফসিয়ার শেখ ও হালিম শেখ নামে দুজনের কাছে ওই জমি লিখে দেন। তারা ২০০৭ সালে ওই জায়গা দখল নিয়ে মন্দির সংলগ্ন পুকুরে মাছ চাষ করে। তবে এক মাস পরই তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি), উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় লোকজন তাদের দখল উচ্ছেদ করেন। তবে ১০ দিন আগে তারা আমিন এনে ওই জায়গা মাপ দিয়ে দখল করতে গেলে স্থানীয় লোকজনের বাঁধার মুখে তারা চলে যান। এরপর থেকে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আতঙ্কে আছেন বলে জানা গেছে।

সমাবেশ ও মানববন্ধনে মন্দির কমিটির কর্মকর্তা রজত শুভ্র মল্লিক বলেন, প্রতি বছর টেংরাখালীর মেলায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সমবেত হয়, দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তরা এসে এখানে মানত করে থাকেন। এ জায়গা যদি ব্যক্তি দখলে চলে যায় তাহলে দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা আর অনুষ্ঠিত হবে না, পূজা-অর্চনাও বাধাগ্রস্থ হবে।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ফসিয়ার শেখ ও হালিম শেখ ফোনে জানান, তারা ২০০৬ সালে সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের বড়কুলা গ্রামের শরৎ চন্দ্র রায়ের কাছ থেকে ৩ একর ৮ শতাংশ জমি কিনেছেন, এর কাগজপত্র তাদের কাছে রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com