মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:১৩ পূর্বাহ্ন

শীতে কাঁপছে রাজশাহী, কম্বলের জন্য অপেক্ষা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৭ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

ঠান্ডা বাতাস বইছে। রোদও ওঠেনি। তবু রোদের আশায় বাড়ির সামনে বসে আছেন বৃদ্ধ তাসলিমা বেওয়া। গায়ে ছেঁড়া সোয়েটার আর একটা কাপড়। তাসলিমা বেওয়া বললেন, ‘খুব জাড় বাপ। একখান কম্বল পাইলি ভালোই হইতো। কে দেবে? কেউ তো দেওয়ার নাই। তাই সূর্য উঠার দিকে তাকাছি। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা যদি আসে, একটা কম্বল দিলে ঠান্ডাডা কাটত।’

রাজশাহীতে গত বুধবার থেকে বইছে ঠান্ডা বাতাস। সেই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। এ অবস্থায় রাজশাহী নগরের সাহেববাজার এলাকায় ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোয় হুমড়ি খাওয়া ভিড় শুরু হয়েছে। কিন্তু এটুকু সামর্থ্যও যাঁদের নেই, তাঁরা কাঁপছেন শীতে। সরকারিভাবে শীতার্তদের জন্য কম্বলের যে বরাদ্দ এসেছে, তা খুব অপ্রতুল বলছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, আজ রাজশাহীতে সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডিসেম্বর মাসের শুরুতে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রিতে নেমেছিল। তখন হিমেল হাওয়া ছিল না। এখন আবার কয়েক দিন থেকে কনকনে ঠান্ডা বাতাস বইছে। এ কারণে তাপমাত্রা বেশি নিচে না নামলেও শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে।

এদিকে আজ থেকে শুরু হওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে সকাল-সন্ধ্যা শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তাঁরা। জেলার ৯ উপজেলা ও ১৪টি পৌরসভায় কম্বল বরাদ্দ হয়েছে শীতার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য। তবে বেশির ভাগ এলাকায় কম্বল বিতরণ শুরু হয়নি। কম্বল পড়ে আছে গুদামে। ফলে শীতে কাঁপছেন মানুষ।

উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম মাখন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ বাসিন্দা পদ্মার নদীর পাড়ে বসবাস করে। একটু বাতাসেই তীব্র শীত অনুভব হয়। দুই সপ্তাহ ধরে শুনছি কম্বলের বরাদ্দ এসেছে, কিন্তু এখনো হাতে পাইনি।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফরহাদ লতিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কম্বলের বরাদ্দ দুই সপ্তাহ আগে পেয়েছি। এতিমখানাসহ কিছু জায়গায় প্রায় ৫০০ পিস বিতরণ হয়েছে। ইউনিয়ন প্রতি ৩০০ পিস হারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ইউনিয়নগুলোয় তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দীন আল ওয়াদুদ বলেন, ‘পুরো জেলার জন্য ১০ হাজার কম্বল পাওয়া গিয়েছিল। এ ছাড়া ৭৮ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। এ টাকায় আরও ৩৫ হাজার কম্বল কেনা হয়েছে। এগুলো বিতরণের জন্য ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। আরও পাঁচ হাজার কম্বল পাওয়া যাবে বলে চিঠি পেয়েছি।’

সালাহউদ্দীন আল ওয়াদুদ আরও বলেন, ‘এই কম্বলও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। কখনোই তো চাহিদার সবটা পাওয়া যায় না। এভাবে চালিয়ে নিতে হয়। সামনে আরও কিছু কম্বল বিতরণের জন্য আসতে পারে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com