অনলাইন নিউজ : মহামারি করোনার মধ্যে নতুন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২২৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে আগস্টের প্রথম ১০ দিন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো দুই হাজার ৩২১ জন। মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হন ২১১ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর দেশে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৯৭৯ জনের দেহে। এসব রোগীর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন চার হাজার ৪৬ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৯১৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৮৫২ ডেঙ্গু রোগী।
চলতি বছরে ডেঙ্গু সন্দেহে ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য আইইডিসিআরে জমা পড়েছে। তারা জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগস্টের প্রথম ১০ দিনে জুলাই মাসের বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশে জুলাইয়ে ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ২ হাজার ২৮৬ জনের দেহে।
এদিকে করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর এই বিস্তার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে সরকার। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশকনিধন কর্মসূচিসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। যেসব ভবনে এডিস মশার লার্ভা ও মশার বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে, সেসব ভবন মালিককে বিভিন্ন অঙ্কের আর্থিক জরিমানা করছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ায় মশার মাধ্যমে। অন্য মশার সঙ্গে ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী এডিস মশার পার্থক্য আছে। মূলত এই মশার জন্ম হয় আবদ্ধ পরিবেশে। ফলে নাগরিকরা সচেতন না হলে এই রোগ প্রতিরোধ করা কঠিন।
২০১৯ সালে ডেঙ্গু রোগে ব্যাপক প্রাণহানি ও লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর গত বছর সতর্ক অবস্থানে ছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তারপরও ২০২০ সালে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ১ হাজার ৪০৫ জন, যাদের মধ্যে ৬ জন মারা যায়।
২০১৯ সালে ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারে আক্রান্ত হয় ১ লাখের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। গত বছর সংক্রমণের মাত্রা অনেকটা কম থাকলেও এ বছর পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে।