বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়িয়েছে দুইটি গ্রুপ। পরিস্থিতি আতঙ্কিত করতে অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। শনিবার (০১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের নবাব জায়গীর এলাকার পদ্মা নদীর ০৮ নম্বর রক্ষা বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় দুই পক্ষ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হলেও সংঘর্ষ হয়নি। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই এলাকায় উত্তেজনা ও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন থেকেই পদ্মা নদী থেকে মাটি উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এমনকি এনিয়ে অভিযোগ হয় ইসলামপুর পুলিশ ফাঁড়িতেও। পরে পুলিশ উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করলেও মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে আবারও মুখোমুখি হয় দুই পক্ষ। তবে উভয় পক্ষের সন্ত্রাসীধের আটক না করা হলে যে কোন সময় ঘটতে পাওে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।কিন্তু পুলিশ বিকেল ৪ টা পর্যন্ত কাউকেই আটক করতে পারেনি।
নবাব জায়গীর এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, বাড়িতেই বসে ছিলাম, হঠাৎ সকালে বিকট শব্দ পেলাম। টানা কয়েকবার এই শব্দ হলো। সাথে সাথেই এক ভাগনে ফোন দিয়ে বললো, মাটি কাটা নিয়ে দুই গ্রুপের ঝামেলার সূত্র ধরে ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছে, আপনি নিরাপদ স্থানে সরে যান। পরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। বলা তো যায় না, যেকোনভাবে ভুক্তভোগী হয়ে যেতে পারি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাকিম জানান, রাত থেকেই এলাকায় গুঞ্জন ছিল, সকালে ঝামেলা হবে। খবর পেয়েছিলাম, রাতেই ককটেল বানানো হচ্ছে। যা সকালে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। দুই পক্ষই হাঁসুয়া, চাকু, বোমা (ককটেল) নিয়ে মুখোমুখি হলেও সংঘর্ষ হয়নি বা কেউই হতাহত হয়নি। এসময় আনুমানিক ৭০টি ককটেল বিস্ফোরণ করানো হয়।
মাটি কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে মো. লুটু ওরফে লুটু মেকার বলেন, পদ্মা নদীর ধারের আমরা নিজেদের জায়গা কেটে বাঁধ সংস্কার কাজে মাটি সরবরাহ দিচ্ছি। স্থানীয় আজিজুল ও টিপু চেয়ারম্যানের লোকজন দুইটি গ্রুপ একসাথে হয়ে আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে সকালে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে। কয়েকটি ককটেলের শব্দ পেয়েই আমরা এলাকা থেকে পালিয়েছি। ঘটনার পর থেকেই মাটি কাটা বন্ধ রয়েছে।
এবিষয়ে কথা বলতে সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হবিবুর রহমানের একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ময়েজ উদ্দিন বলেন, পদ্মা নদীতে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাটি আমিও শুনেছি। তবে এবিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, পদ্মা নদীতে মাটি কাটাকে নিয়ে বিরোধে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে পুলিশ এ ঘটনায় দুপুর ৩টা পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি বলেও জানান তিনি।