বিপুল জনসমাগমের মধ্য দিয়ে শেষ হলো রিহ্যাব ফেয়ার ২০২২। ২১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এ মেলা শেষ হয় গতকাল রোববার দুপুর ২টায়। মেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় রিহ্যাবের পক্ষ থেকে। মেলা প্রাঙ্গণে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের আবাসন মেলার পাঁচ দিনে ৩৫১ কোটি টাকার ফ্ল্যাট-প্লট এবং বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি ও বুকিং হয়েছে। এ ছাড়া গৃহঋণ সংক্রান্ত ব্যাংক কমিটমেন্ট এসেছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেলা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলার শেষ দিন রোববার দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩৫১ কোটি ১৬ লাখ টাকার ফ্ল্যাট, প্লট এবং বাণিজ্যিক স্পেস বিক্রি ও বুকিং হয়েছে। এর মধ্যে ফ্ল্যাট বিক্রি ও বুকিং হয়েছে ১৬৮ কোটি টাকার। আর প্লট ৮০ কোটি এবং বাণিজ্যিক স্পেস ৫৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বুকিং ও বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক কমিটমেন্ট এসেছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছেন ১৬ হাজার ১৩২ জন।
রিহ্যাব সহ-সভাপতি বলেন, আবাসন মেলার মূল উদ্দেশ্য আবাসন খাতকে ব্র্যান্ডিং করা, প্রকল্পকে উপস্থাপন করা। এখানে যেসব ক্রেতা-দর্শনার্থী এসেছেন তারা সবাই ফ্ল্যাট বা প্লট কেনার উদ্দেশ্যে এসেছেন। কেউ হয়তো এখন কিনেছেন, কেউবা পরে কিনবেন। তিনি আরও বলেন, মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের কাছে তাদের পণ্যের মান তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে ক্রেতারা পণ্য দেখে পরবর্তীতে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বছর মেলায় অংশ নেওয়া অনেকে ডিজিটাল মাধ্যমে নিজেদের পণ্য তুলে ধরেন। বিদেশ থেকেও বাংলাদেশি প্রবাসীরা তাদের ফ্ল্যাট-প্লট সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পেরেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ, মেলা বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি (অর্থ) প্রকৌশলী সোহেল রানা, রিহ্যাব প্রেস-মিডিয়া কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব পরিচালক মো. সুলতান মাহমুদ, রোটারিয়ান এস এম এমদাদ হোসেন, ড. এ এফ এম কামাল উদ্দিন।
রিহ্যাব সহ-সভাপতি (অর্থ) প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, এই কয়েক দিনে ঢাকাবাসীর ব্যাপক সাড়া আবাসন খাতকে উৎসাহিত করেছে, আশান্বিত করেছে। মেলায় বিক্রির চেয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান আসে ব্র্যান্ডিং এর জন্য। তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়েছে বলে মনে করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড়সহ নানা ধরনের অফার দিয়েছে, মেলা শেষ হলেও আরও কয়েক দিন এই সুযোগ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানগুলো দিতে পারবে। ক্রেতারা তাদের প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মেলার আসল উদ্দেশ্য ব্রান্ডিং করা। এখানে যেসব ক্রেতা দর্শনার্থী এসেছেন তারা সকলেই ফ্ল্যাট বা প্লট ক্রয় করবেন। কেউ হয়তো এখন ক্রয় করবেন আর কেউ হয়তো সামনের বছরগুলোতে ক্রয় করবেন। মেলায় যারা এসেছেন তারা আসলে সবাই ক্রেতা। কারণ এই মেলায় বিনোদনমূলক কিছু নেই, যারা মেলায় টাকা দিয়ে টিকেট কেটে প্রবেশ করেছেন তারা সবাই ক্রেতা। মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় আসা ক্রেতা নিকট তাদের পণ্যের মান সম্পর্কে তুলে ধরেছেন। তারা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নার্সিং করবেন আর ক্রেতারা যে প্রডাক্ট দেখে গেলেন তা যাচাইবাছাই করবেন এবং পরবর্তীতে ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেবেন। একসঙ্গে অনেকগুলো ক্রেতা পাওয়া একমাত্র রিহ্যাব ফেয়ারেই সম্ভব।
এ বছর অনেক অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের পণ্য তুলে ধরেছেন। বিদেশ থেকেও প্রবাসীরা তাদের পণ্য সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন। এ বছর মেট্রোরেলের কারণে উত্তরা এবং মিরপুর এর দিকে ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি। কারণ আর দুই দিন পরেই মেট্রোরেলের আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন হতে যাচ্ছে এবং আগামী বছর মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই এলাকার নাগরিকরা সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন। ফলে সেখানে ফ্ল্যাটের চাহিদা বাড়ছে।
এ বছর ফ্ল্যাটের দাম আগের চেয়ে তুলনামূল বেশি। রড-সিমেন্টসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি, ড্যাপ এ ফার হ্রাসসহ নানা কারণে ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ড্যাপে ফারের পরিমাণ বাড়ানো হবে এমন প্রত্যাশা করে আবাসন খাতের জন্য নীতি সহায়তা চাওয়া হয় সরকারের কাছে।
এ জাতীয় আরো খবর..