বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক
রাজশাহীতে পান ব্যবসায়ীদের ৩৪ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার ভোরে নগরীর পোস্টাল একাডেমির সামনে অ্যাম্বুলেন্সে এসে সিএনজি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা লুটে নেয় সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। দুইজন ব্যবসায়ী ঢাকায় পান বিক্রি করে সিএনজি যোগে জেলার মোহনপুর ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে, ডাকাতির ঘটনায় নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের ব্যবহৃত একটি এ্যাম্বুলেন্স, অস্ত্র ও খোয়া যাওয়া ১৬ লাখও টাকা উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায়, রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার পোস্টাল একাডেমির সামনে ডাকাতির ঘটনায় ৬ ঘন্টার মধ্যে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়। একইসঙ্গে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সটিও জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের সদর দফতরে এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ এসব তথ্য জানায়। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মজিদ আলী এইসব তথ্য নিশ্চিত করেন। সময় গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের সাংবাদিকদের সামনেও হাজির করা হয়। এরা হলো-রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার পূর্ব মোল্লাপাড়ার রাজ্জাকের ছেলে আশিক ইসলাম (২৪), আজাদ আলীর ছেলে হৃদয় (২৪), রাজপাড়া থানার আলীগঞ্জ মধ্যপাড়ার আসলাম আলীর ছেলে আব্দুর রহমান (২১), আসলামের ছেলে আব্দুর রহিম (২০), ডিঙ্গাডোবা ঘোষ মাহালের লোকমানের ছেলে রিকো ইসলাম (২১) ও চন্ডীপুর সুফিয়ানের মোড়ের এবাদুলের ছেলে ইয়ামিন (২০)।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে নগর পুলিশ জানায়, রাজশাহী নগরীর পবা থানার এখলাছ মোল্লার (৮৫) নেতৃত্বে সমিতি গঠন করে জেলার দুর্গাপুর থানার দাওকান্দি বাজারে পানের ব্যবসা করেন তারা। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পান সংগ্রহ করে ঢাকার শ্যামবাজারে আড়তে বিক্রি করেন। তিনি জানান, সর্বশেষ গত রবিবার ভোরে তাদের সমিতির পান ব্যবসায়ী রায়হান আহম্মেদ (২৬), শহিদুল ইসলাম (৩০) ও আমিনুল ইসলাম (২৭) ঢাকায় পান বিক্রির ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা নিয়ে রাজশাহী নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে পৌঁছে। সেখান থেকে তারা একটি সিএনজি ভাড়া করে দুর্গাপুরের দাওকান্দি বাজারে যাচ্ছিলেন। এ সময় পোস্টাল একাডেমীর কাছে পৌছালে পেছন থেকে ফলো করা একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে তাদের গতিরোধ করে। সিএনজি থামার সঙ্গে সঙ্গে এ্যাম্বুলেন্স থেকে ৬-৭ জন ডাকাত বের হয়ে চায়নিজ কুড়াল, হাসুয়া, চাকু, ছোরা ও লোহার রড নিয়ে তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় রায়হান পালানোর চেষ্টা করে। ডাকাতরা তাকে ধরে মারধর করে তার কাছে থাকা ১৪ লাখ ২৭ হাজার টাকাসহ অন্যদের কাছে থাকা মোট ৩৪ লাখ ২৭ হাজার টাকা লুট করে সেই এ্যাম্ব^ুলেন্সে পালিয়ে যায়।
পরে সমিতির নেতা এখলাছ মোল্লা খবর পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাহমখদুম ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে পুলিশের একটি টিম আসামিদের নাম ঠিকানা ও অবস্থান সনাক্ত করে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেন।
তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেফতার করে। এসময় আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪০ টাকা ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়। অবশিষ্ট টাকা উদ্ধার ও সহযোগী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে পুলিশ জানান।