নিজস্ব সংবাদদাতা : বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুতের উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা কমাতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার এবং অদক্ষ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
আগামী অর্থবছরের উন্নয়ন পরিকল্পনায় এই খাতে দক্ষতা বাড়াতে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ২৬ হাজার ১১৮ কোটি ৭৬ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যেতে পারে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৪ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
রোজার শুরুতে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সারাদেশে পিডিবির প্রায় সবগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল করতে হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে ১৩ হাজার ৭০০ মেগাওয়াটের চাহিদা পূরণ করা গেছে। উৎপাদন সক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াট হলেও অদক্ষতার কারণে পুরোটা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন, উৎপাদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে যেসব সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তাদেরকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়া ও দক্ষতা বাড়াতে দ্রুত আরও বিনিয়োগ করতে হবে। এতেই ২/১ শতাংশ সাশ্রয়ী হয়ে যাবে। এই ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। অদক্ষ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো দ্রুতই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
পিডিবির অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে অধিক জ্বালানি নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যে অডিট করেছি তাতে এগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। ওই স্থানের বিদ্যুতের চাহিদা কিভাবে পূরণ করা হবে সেটারও একটা পরিকল্পনা থাকা চাই। ওইটা চালু রাখতে হবে, এইটা চালু রাখতে হবে এমন খণ্ড খণ্ড চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
ওয়েবিনারে বাংলাদেশ ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসারস অ্যাসেসিয়েশন- বিআইপিপিএ’র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
তিনি বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের অবদান উল্লেখ করে স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রশন ফি, অগ্রিম কর ও এইচএফও-এর উপর ৩৪ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি জানান।
এছাড়া পিডিবি থেকে বিদ্যুতের বিল পেতে বিলম্ব হওয়া, পরিবেশগত সনদপত্র পেতে হয়রানি, স্টোরেজ ট্যাংকের ভাড়া ইত্যাদি বিষয়েও বিদ্যুৎ বিভাগের সহযোগিতা চান।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ৯১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ৯ হাজার ৪৭৩ মেগাওয়াট হয়েছে, যা মোট সক্ষমতার ৪৩ শতাংশ।
বেসরকারি কেন্দ্রগুলোর উল্লেখিত সমস্যাগুলো বিদ্যুৎ বিভাগ, এনবিআর ও বিআইপিপিএ মিলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
এফইআরবির চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী পরিচালক শামীম জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান, পিডিবির চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন ও বিআইপিপিএর সভাপতি ইমরান করিম বক্তব্য দেন।