নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ ৩০ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। তবে লকডাউন বাড়লেও এ সময় চলাচল করতে পারবে সবধরনের গণপরিবহন। এছাড়া বন্ধ থাকা দূরপাল্লার সব বাসও চলচাল করতে পারবে।
এজন্য শর্ত দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। রোববার (২৩ মে) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তঃজেলাসহ সব গণপরিবহন অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে মাস্ক পরিধানসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এছাড়া হোটেল ও রেস্তোরাঁতেও সীমিত পরিসরে বসে খাওয়া যাবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার চলতি বছর প্রথমে ৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছিল। পরে তা আরও দুদিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়। পরে তা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরইমধ্যে, বিধিনিষেধে একই জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলেছে। তবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এছাড়া যাত্রীবাহী নৌযান আগের মতো বন্ধ আছে।
এদিকে, বিধিনিষেধ আরও সাত দিন বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সুপারিশ করেছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে ছিল।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১৮ মের পর আর কোনো আপডেট নেই, মিটিংও হয়নি। আমাদের মূল ফোকাস স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সরকারের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেওয়া। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বিপদ আছে।
তিনি আরও বলেন, টিকা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। আমাদের টার্গেট ১২ কোটি টিকা প্রদান। এটা নিশ্চিত করতে হবে। ঈদের সময়ের পরিস্থিতির কারণে করোনা বেড়ে যাওয়া শঙ্কাটা এখনও আছে। এই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পুরো জুন মাসই ঝুঁকির মধ্যে আছি আমরা।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ আর মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতি রুখতে সারাদেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সাত দিনের লকডাউন। লকডাউন শেষে দুদিন বিরতির পর গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আট দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়।
সেই মেয়াদ শেষ হয় গত ২১ এপ্রিল মধ্যরাতে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে লকডাউন বাড়ানো হয় ৫ মে পর্যন্ত।
এরপর গত ৩ মে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আবারও লকডাউন বাড়িয়ে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।