বিডি ঢাকা ডেস্ক
সম্প্রতি অনলাইন জুয়ার বিস্তার এবং প্রবাসীদের লক্ষ্য করে প্রতারণামূলক লটারির বিস্তার ঘটেছে। এই দুই সংকটের ফলে প্রবাসীরা যেমন আর্থিকভাবে বিপদগ্রস্ত হচ্ছেন, সরকারও উল্লেখযোগ্য হারে হারাচ্ছে রাজস্ব।
নীলফামারীতে একটি প্রতারক চক্রের অত্যাধুনিক নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে বলে সম্প্রতি জানা গেছে। এদের খপ্পরে পড়ে এনজিও এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে, জমি বন্ধক রেখে জুয়া খেলে ও লটারি কেটে অনেকেই হচ্ছেন সর্বস্বান্ত। তরুণদের অনেকেই কৌতূহলবশত এ মরণ খেলা শুরু করার পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছেন।
জানা গেছে, অনলাইন জুয়ায় প্রথমে লাভবান হয়ে অনেকেই লোভে পড়েন। পরবর্তী সময়ে খোয়াতে থাকেন লাখ লাখ টাকা। জুয়ার কারণে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্য জীবনে কলহ। খেলার টাকা জোগাড় করতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও ভাড়ায় খুনের মতো অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে তারা।
জানা গেছে, নীলফামারীর এই প্রতারকচক্র প্রবাসীদের থাই লটারি থেকে বিপুল অর্থ জেতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলুব্ধ করেন। চুরি হওয়া এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক এবং ইমো আইডি তৈরির মাধ্যমে তাদের কাজ শুরু হয়।
একবার এই অ্যাকাউন্টগুলো সেট আপ হয়ে গেলে, প্রতারকরা তাদের লটারির পোস্টগুলো বিভিন্ন প্রবাসী সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে শেয়ার ও কমেন্ট করা শুরু করে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়াতে ডলারের মাধ্যমে লটারির ভিডিও বিজ্ঞাপন দিয়ে ব্যাপক মানুষের কাছে পৌঁছায় তারা।
প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন অত্যন্ত লোভনীয়ভাবে ডিজাইন করা হয়। এতে মডেল হিসেবে দেখা যায় জনপ্রিয় মুখ, ফলে সাধারণ প্রবাসীরাও এসব বিজ্ঞাপনকে বিশ্বাস করে। কিছু ভিডিওতে প্রবাসীদের বিশ্বাস অর্জনের লক্ষ্যে ধর্মগ্রন্থ হাতে নিয়ে ভিডিও করতেও দেখা গেছে প্রতারকদের।
প্রবাসীদের বিভিন্ন যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম যেমন ইমু, হোয়াটসঅ্যাপ এবং এমনকি বিকাশ এবং রকেটের মতো জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। একবার যোগাযোগ স্থাপন করা হয়ে গেলে ভুক্তভোগীদের লটারির ফি বা ট্যাক্সের কথা বলে বড় অঙ্কের অর্থ পাঠাতে বাধ্য করা হয় ব্রেনওয়াশ করে। আর টাকা পাঠালেই চোখের পলকেই প্রতারক চক্রের কাছে সর্বস্ব হারান তারা।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার সলিমের বাজার এলাকা থেকে থাই লটারির নামে প্রতারণার অভিযোগ জনৈক তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার, ক্রমবর্ধমান এ সংকট সম্পর্কে সচেতন, অনলাইন জুয়া এবং জালিয়াতি রোধে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬০০টিরও বেশি জুয়া খেলার ওয়েবসাইট ব্লক করা হয়েছে এবং প্রক্রিয়াটি চলমান।
তবে জুয়ারিরা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের (ভিপিএন) মাধ্যমে ব্লক করা ওয়েবসাইট ও অ্যাপসে প্রবেশ করতে পারছে বলেও জানিয়েছেন অনলাইন বিশেষজ্ঞরা।