রাজশাহীর তানোরের সীমান্ত সংলগ্ন নিয়ামতপুরের বাহাদুর ইউনিয়নের (ইউপি) জোনাকি ও আদমপুর মাঠে ফসলি জমি নষ্ট করে অবৈধভাবে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।এদিকে নিয়ামতপুর উপজেলা সীমান্তে পুকুর খনন করা হলেও তানোর উপজেলার চৌবাড়িয়া ও মালশিরা এলাকায় মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধ মাটি বাণিজ্য করে সরকারি পাকা-কাঁচা রাস্তা নষ্ট এবং ভেকুঁ ও ট্রাক্টরের বিকট শব্দের পাশাপাশি ধুলা-বালিতে পরিবেশ দুষণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।একদিকে ফসলি জমিতে পুকুর খনন,অন্যদিকে সেই মাটিতে ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে, দুটোই দন্ডনীয় অপরাধ।অথচ এই অপরাধমুলক কাজ করা হচ্ছে প্রকাশ্যে দিবালোকে ? কিন্ত্ত অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নিরব ?
স্থানীয়দের অভিযোগ রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে এসব অবৈধ মাটি বাণিজ্য করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ট্রাক্টরে কাদামাটি পরিবহণ করায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি কাঁচা-পাকা রাস্তাঘাট। মাটিবাহী গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে ধুলোবালিতে অতিষ্ঠ পথচারিরা। এছাড়া প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অবাধে মাটি কাটায় কমছে কৃষি জমির পরিমাণ, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় একশ্রেণির এক্সকেভেটর (ভেকু) ব্যবসায়ীরা চুক্তিভিত্তিকভাবে রাতারাতি কৃষি জমি গিলে খাচ্ছে। আর সমাজের কিছু অসাধু ব্যক্তির পকেট ভরতে গিয়ে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা নিমিষেই বানের জলে ভেসে যাচ্ছে।
কৃষি ও পরিবেশবিদরা বলছেন, অবাধে পুকুর খননে উপজেলায় কৃষি জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে একই সঙ্গে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে খাল-বিলের প্রাণিকুল। ভেকুঁ দালাল জনৈক রাজু ও জুয়েল বলেন, সবাইকে ম্যানেজ করে মাটিকাটা হচ্ছে এসব নিয়ে পত্রিকায় খবর করে লাভ হবে না। তারা বলেন,স্থানীয় এক বিএনপি নেতার মাধ্যমে ম্যানেজ পক্রিয়া করা হয়েছে।
এদিকে খোলা ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে কৃষি জমির মাটি এনে বিভিন্ন জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। মাটিবাহী গাড়ির কাদামাটিতে পাকা সড়কে কাদামাটি পড়ে নষ্ট হচ্ছে। সেই কাদামাটি সরানোর কাজে শ্রমিকদের নিয়োজিত রেখেছেন ভেকু ব্যবসায়ীরা। কোদাল দিয়ে মাটি সরাতে গিয়ে পাকা সড়কের পাথর ও উপরের প্রলেপ বিটুমিন উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে।
উপজেলার চৌবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মকবুল হোসেন ও মিজানুর বলেন, ভেকুর বিকট শব্দ ও ধুলাবালিতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারা বলেন,বিষয়টি বাহাদুর ইউপির বিট অফিসারকে জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। গত শুক্রবার তিনি এসে ভেঁকু দালাল রাজুর সঙ্গে কথা বলে গেছেন,তার পরেও বন্ধ হয়নি মাটি কাটা।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, রাস্তার বিটুমিনের শত্রু হচ্ছে কাদামাটি। নিয়ম না মেনে মাটি পরিবহন করায় রাস্তায় কাদামাটি পড়ে রাস্তাঘাট দ্রুত নষ্ট হচ্ছে।
এবিষয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মুঠোফোনে কল করা হলেও কল গ্রহণ না করায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।