মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ অপরাহ্ন

আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস,উদযাপনে বর্ণাঢ্য কর্মসূচী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৬ মার্চ, ২০২২
  • ২১১ বার পঠিত
আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস,উদযাপনে বর্ণাঢ্য কর্মসূচী
ফাইল ফটো

অনলাইন নিউজ :আজ ২৬ মার্চ। রক্ত, অশ্রুস্নাত বিক্ষুব্ধ বিদ্রোহের দিন। বাঙালীর শৃৃঙ্খলমুক্তির দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালীর দীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনের চূড়ান্ত লড়াইয়ের সূচনা কাল। বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন আজ। মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। কিন্তু বাঙালী জাতিকে এ জন্য দিতে হয়েছে চরম মূল্য। দেশের মহার্ঘ্য স্বাধীনতার ৫১ বছরের এই ক্ষুদ্র পরিসরে দেশ ও জাতি অনেক ঘটন-অঘটন, চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী হয়েছে। সময়ে সময়ে এসব ঘটনা সমগ্র জাতিকে প্রচন্ড ঝাঁকুনি দিয়েছে, পাল্টে দিয়েছে এর গতিপথ। কখনও জাতির জীবনে এসেছে হতাশা-অন্ধকারাচ্ছন্ন মুহূর্ত, কখনও বা হয়েছে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় উজ্জীবিত।

যদিও ৫১ বছর একটি জাতির জীবনে খুব বড় পরিচয় নয়, গড় আয়ুর নিরিখে হয়ত বা একটি প্রজন্ম মাত্র, তথাপি পরাধীনতার শিকল ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা সহস্র বছরের ঐতিহ্য সমৃদ্ধ আত্মমর্যাদায় বলীয়ান একটি জাতির সামনে অর্ধ শতাব্দির এই মাইলফলক অনেক কিছুই বদলে দিয়েছে। যেমনটি টানা তৃতীয় মেয়াদে বঙ্গবন্ধুরকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে গত ১৩ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ, নতুন প্রজন্মের সামনে উদ্ঘাটিত হয়েছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্মের সত্য ও সঠিক ইতিহাস। ইতিহাসের খলনায়করা হারিয়ে গেছে সত্য ইতিহাসের বিশাল স্তূপের নিচে।

স্বাধীনতার এই ৫১ বছরের মধ্যে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যাপরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর এবং পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোটের পাঁচ বছরে পুরো জাতি দেখেছে স্বাধীনতাবিরোধী, একাত্তরের গণহত্যাকারী ও জাতির পিতার খুনীদের আস্ফালন, ইতিহাস বিকৃতির ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র আর স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলার নগ্ন আস্ফালন। কিন্তু সত্য ইতিহাসকে কখনও মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যায় না, তা আজ প্রমাণিত হয়েছে।

স্বাধীনতার ৫১ বছরে বঙ্গবন্ধু আজ শুধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালীই নন, বিশ্বের শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তির অনুপ্রেরণা দাতা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তাঁরই নির্দেশিত পথে তাঁরই জ্যেষ্ঠ কন্যার হাত ধরে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাণশক্তি, সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণেই বাংলাদেশ পেয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালী জাতি। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল এ ব-দ্বীপের মানুষ। ইতিহাসের পৃষ্ঠা রক্তে রাঙিয়ে, আত্মত্যাগের অতুলনীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে একাত্তরের এই দিনে যে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এ দেশের মানুষ, দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন তার চূড়ান্ত পরিণতি। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের সূচনার সেই গৌরব ও অহঙ্কারের দিন আজ। প্রতিবছর মহান স্বাধীনতা দিবস জাতির জীবনের প্রেরণায় উজ্জীবিত হওয়ার নতুন বার্তা নিয়ে আসে।

ভয়াল ‘কালরাত্রি’র পোড়া কাঠ, লাশ আর জননীর কান্না নিয়ে রক্তে রাঙা নতুন সূর্য উঠেছিল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। ভয়াল কালরাতের ধ্বংসস্তূপ আর লাশের ভেতরে দিয়ে রক্ত রাঙা সেই নতুন সূর্য। ভীতবিহ্বল মানুষ দেখল লাশপোড়া ভোর। সারি সারি স্বজনের মৃতদেহ। আকাশে কু-লী পাকিয়ে উঠছে ধোঁয়া। পুড়ছে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র আঁকা লালসবুজ পতাকা। জ্বলছে শাড়ি, খুকুর ফ্রক। চোখে জল। বুকে আগুন। জ্বলে উঠল মুক্তিকামী মানুষের চোখ, গড়ল প্রতিরোধ। মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে ‘জয় বাংলা’ তীব্র সেøাগান তুলে ট্যাঙ্কের সামনে এগিয়ে দিল সাহসী বুক।

একাত্তরের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানী হিংস্র শ্বাপদের গণহত্যার বিরুদ্ধে বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ডাকে জীবনপণ সশন্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালী। দীর্ঘ ন’মাস এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের বাঙালীর শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।

আজ ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই বাঙালী জাতির জীবনে সূচনা ঘটবে আরও একটি ঝলমল উৎসব দিনের। রক্ত, অশ্রুস্নাত বিক্ষুব্ধ বিদ্রোহের দিন ২৬ মার্চ। এ ভূ-ভাগের সবচেয়ে বড় অর্জন, বাঙালীর সহস্র বছরের জীবন কাঁপানো ইতিহাস- মহান স্বাধীনতা। অসংখ্য শহীদের রক্তে ভেজা, জাতির বীরসেনানীদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের সূচনা দিন। বাঙালীর স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিন। গৌরব ও স্বজন হারানোর বেদনার এই দিনে বীর বাঙালী সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা করেছিল। তাই আজ গৌরব ও অহঙ্কারের দিন।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ সরকারী ছুটির দিন। আজ পথে পথে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল বাঙালীর কণ্ঠে উচ্চারিত হবে- ‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী ভয় নাই ওরে, ভয় নাই। নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই…’।

কোন হুইসেল বা সৈনিকের ঘোষণায় নয়, এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালী জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে একসাগর রক্ত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে পুরো বাঙালী জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালী। ১৯৪৮, ’৫২ পেরিয়ে ’৫৪, ’৬২, ’৬৬-এর পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে কেঁপে ওঠে জেনারেল আইয়ুবের শাসন। জনতার সাগরে উন্মাতাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা-পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ সেøাগানে সেøাগানে প্রকম্পিত হয় গ্রাম-শহর, জনপদ।

শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। কিন্তু বাঙালীর হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালী হত্যাযজ্ঞে। তবে ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় দিক-নির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালীর হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের ছবি।

কিন্তু বাঙালীর আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা। সেই কালরাত থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদের পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য।

২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করে বলেন, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিতে পিলখানার ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের লোকদের হত্যা করছে। ঢাকা, চট্টগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিগুলোর কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ’র নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ- দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোন আপোস নাই, জয় আমাদের হবেই। আমাদের পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সব আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং অন্য দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতাপ্রিয় লোকদের এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আমাদের মঙ্গল করুন। জয় বাংলা।’

বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার হওয়ার পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বর্বর ও নির্বিচারে গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও সর্বব্যাপী পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বাঙালী জাতি তাদের সর্বশক্তি নিয়ে ইস্পাতকঠিন প্রত্যয় নিয়ে সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সারাদেশে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। দেশের অকুতোভয় বীর সন্তানরা তুমুল যুদ্ধ করে লাখো প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী মাথানত করে পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পায় এক সাগর রক্তের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশ, স্বাধীন পতাকা- যাঁর নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।জাতি শ্রদ্ধা জানাবে বীরাঙ্গনা আর শহীদ মাতাদের। দৃপ্ত শপথ নেবে- জঙ্গী-সন্ত্রাস, উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও যুদ্ধাপরাধীমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে। স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার। কৃতজ্ঞ বাঙালী জাতি আজ দৃঢ় শপথে বলীয়ান হবে সকল অন্ধকারের শক্তিকে পরাজিত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে গড়ে তোলার।’৭৫ পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল, তাঁর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি বাজানোর ওপরও ছিল অলিখিত নিষেধাজ্ঞা। সময়ের ব্যবধানে আজ সেই ঐতিহাসিক ভাষণ জাতিসংঘের ইউনেস্কো ঘোষিত ‘বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল’ হিসেবে বিশ্বসভায় স্বীকৃত। দেশকে স্বাধীন করে জাতির পিতা তাঁর জীবনের প্রথম লক্ষ্য পূরণ করেছেন। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় লক্ষ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন, যা তিনি সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। সেই লক্ষ্য পূরণে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক বিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেলে পরিণত হয়েছে।

যে বাংলাদেশকে একদিন হেনরি কিসিঞ্জারসহ পৃথিবীর অনেকেই হাস্যাষ্পদ মন্তব্য করে বলেছিল, ‘বাংলাদেশ হবে তলাবিহীন ঝুড়ি, বাংলাদেশ হবে দরিদ্র দেশের মডেল।’ আজ তাদের বক্তব্য ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশ ’৭৫-এ ছিল স্বল্পোন্নত আর আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। স্বাধীনতা দিবসের আনন্দঘন ক্ষণে জাতির পিতার আরাধ্য স্বপ্নের বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে স্বপ্নপূরণের পথে এগিয়ে যাবার মহতীযাত্রা অব্যাহত রাখবে।২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে আজ প্রত্যুষে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।

আজ সকল সরকারী, আধা-সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারী ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদকদল বাদ্য বাজাবেন।দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করেছে।

এছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। দেশের সকল হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।দেশের সকল শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহ বিনা টিকেটে উন্মুক্ত রাখা হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রাবন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজসমূহ আজ দুপুর ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচী পালন করবে।

আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে- ভোরে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারাদেশে সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টায় সীমিত পরিসরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল সাতটায় ধানম-ির বত্রিশেই ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, মসজিদ-মন্দির-প্যাগোডা-গির্জাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ দোয়া, মিলাদ মাহফিল এবং প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।আওয়ামী লীগের একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল সকাল ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেবেন। আগামীকাল রবিবার বিকেল ৩টায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা। এতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব ও বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com