অনলাইন নিউজ : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশি^ক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি পেয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। বৃদ্ধি পাচ্ছে বন্যা ও খরার প্রবণতা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বিশে^র শীর্ষ ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ, যদিও এর জন্য বাংলাদেশ খুব একটা দায়ী নয়। বৈশি^ক মাত্র শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী হলেও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ বিশে^র অন্যতম শীর্ষ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ।
এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়ে আজ ৫ জুন সারা বিশে^র মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বিশে^র অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘একটাই পৃথিবী : প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন’।
এ ছাড়া এবারের জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘বৃক্ষ-প্রাণে প্রকৃতি প্রতিবেশ, আগামী প্রজন্মের টেকসই বাংলাদেশ’।
১৯৬৮ সালের ২০ মে জাতিসংঘের অর্থনীতি ও সামাজিক পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠায় সুইডেন সরকার। চিঠির বিষয়বস্তু ছিল প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে তাদের গভীর উদ্বেগের কথা। সে বছরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সাধারণ অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরের বছর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সমাধানের উপায় খুঁজতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সম্মতিতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ১৯৭২ সালের ৫ থেকে ১৬ জুন জাতিসংঘ মানব পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনটি ইতিহাসের প্রথম পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বীকৃতি পায়।
১৯৭৪ সালে সম্মেলনের প্রথম দিন ৫ জুনকে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। সেই থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। পরিবেশ দিবস উপলক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতর ও বন অধিদফতরের পক্ষ থেকেও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী পরিবেশ মেলা এবং মাসব্যাপী জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন এবং ৫ জুন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত পরিবেশ মেলা ও ৫ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২২-এর উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এ উপলক্ষে জাতীয় সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং পরিবেশ অধিদফতর ও বন অধিদফতর থেকে স্মরণিকা প্রকাশ করেছে।
এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে ঢাকা মহানগরীর ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সব মোবাইল ফোন অপারেটরের মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠানো হবে এবং ওয়েলকাম টিউন সংযোজন করার ব্যবস্থা করা হবে। পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সেøাগান প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
এ ছাড়া পরিবেশ বিষয়ক সেমিনার, গোলটেবিল আলোচনা, পরিবেশ সচেতনতামূলক কার্যক্রম, পরিবেশ অধিদফতর সম্পর্কিত বুকলেটের পরিমার্জিত সংস্করণ প্রণয়ন ও প্রকাশ, ইটিপিবিহীন ও দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের জন্য সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় বৃক্ষমেলার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বৃক্ষ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..