বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন

এমপি পদ হারাচ্ছেন ঢাকা-৭ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম সাজা বহাল রেখে রায় প্রকাশ, আত্মসমর্পণের নির্দেশ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ২১৩ বার পঠিত
এমপি পদ হারাচ্ছেন ঢাকা-৭ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম সাজা বহাল রেখে রায় প্রকাশ, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
ফাইল ফটো

অনলাইন নিউজ : ঢাকা-৭ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায় প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। তবে তথ্য গোপনের অভিযোগে বিচারিক আদালতে তার যে তিন বছরের সাজা হয়েছিল তা বাতিল করা হয়েছে। রায় প্রদানকারী বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের স্বাক্ষরের পর বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এ রায় প্রকাশ করা হয়।

দুর্নীতি মামলায় হাজী সেলিমের ১০ বছর কারাদণ্ড বহালের রায় প্রকাশের পর দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান, সংবিধান অনুযায়ী হাজী সেলিমের এমপি পদ থাকবে না। এর আগে খুরশীদ আলম জানিয়েছিলেন, হাজী মোহাম্মদ সেলিমের সাজা বহালের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সেটি দুদকের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। এরপর স্পিকার হাজী সেলিমের সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

সংবিধান ও নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ন্যূননতম দুই বছর দণ্ডিত হলে সংসদ সদস্য হওয়ার ও থাকার যোগ্যতা হারান যে কেউ। মুক্তিলাভের পাঁচ বছর পার না-হওয়া পর্যন্ত ভোটে অংশ নেয়া যায় না।

সংবিধানের ৬৬(২)-এর (ঘ) ধারা উল্লেখ করে আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, আইন অনুযায়ী হাজী সেলিম সংসদ সদস্য পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ন্যূনতম দু’বছর দণ্ডিত হলে সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারাবেন যে কেউ।

এর আগে গত ৯ মার্চ সংক্ষিপ্ত রায়ে হাজী সেলিমের প্রায় ২৬ কোটি টাকা মূল্যের যে সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। অন্যথায় জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ মামলার অন্য আসামি হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরার মৃত্যু হওয়ায় তার আপিলটি বাদ দেয়া হয়েছে। তবে প্রয়াতের নামে থাকা যেসব সম্পদ রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তা বলবৎ থাকবে। হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা গত ৩০ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এই মামলায় বিচারিক আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিল। পরে হাইকোর্ট সে সাজা থেকে তাকে খালাস দেয়। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টে এই মামলাটি আবার শুনানি হয়।

আদালতে হাজী সেলিমের পক্ষে শুনানি করেন আবদুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান মনির?।

জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিচারিক আদালতের রায়ে তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। হাইকোর্টের কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। সে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরপর শুনানি শেষে রায় দেয় হাইকোর্ট।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com