শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন

কুরবানির গোশত কি ৩ দিনের বেশি রাখা যাবে?

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০২১
  • ৩৮৪ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ : অনেকেই বলে থাকেন যে, কুরবানির গোশত তিন দিনে বেশি রাখা যাবে না। তিন দিনের মধ্যেই তা খেয়ে বা দান করে শেষ করতে হবে। এ কথাটি কি সঠিক?

এ বিষয় সুস্পষ্ট হওয়া দরকার যে, কুরবানির গোশত তিন দিনের বেশি রাখা যাবে কিনা। রাখলে তা ঠিক হবে না। এ নিয়েও একটি ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। কুরবানির পশুর গোশত তিন দিনের বেশি রাখা যাবে না; এ মর্মে কেউ কেউ একটি হাদিসের তথ্য তুলে ধরেন। এ সম্পর্কে ৩টি কথা বেশি শোনা যায়। তাহলো-

১. কুরবানির পশুর গোশত জমিয়ে রেখে খাওয়া যাবে না।

২. কুরবানির পশুর গোশত জমা করে না রেখে সাদকা করে দিতে হবে।

৩. কেউ কেউ বলেন, ৩দিনের বেশি কুরবানির পশুর গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না।

হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারির একটি বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিন দিনের বেশি কুরবানির পশুর গোশত রেখে খাওয়ার বিষয়টি নিষেধ করেছেন।

এ বিষয়টির সুস্পষ্ট সমাধান হলো-

কুরবানির পশুর গোশত সম্পর্কে উল্লেখিত ধারণা বা বক্তব্যগুলো ভুল। কুরবানির গোশত নিজেরা খেতে পারবে, অন্যকে হাদিয়া দেয়া যাবে এবং সংরক্ষণও করা যাবে। এ ব্যাপারে হাদিসে পাকে একাধিক দিক-নির্দেশনা এসেছে। তাহলো-

১. হজরত সালামা ইবনে আকওয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমাদের যে লোক কুরবানি করেছে, সে যেন তৃতীয় দিনে এমন অবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কুরবানির গোশতের কিছু থেকে যায়।

পরবর্তী বছর সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তেমন করব, যেমন গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি (রাসুলুল্লাহ) বললেন-

‘তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ। কারণ গত বছর মানুষের মধ্যে ছিল অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম, তোমরা তাতে সহযোগিতা কর।’ (বুখারি, মুসলিম)

উল্লেখিত হাদিসে অন্যকে আহার করাও বলতে সমাজের গরিব অসহায়দের দান এবং ধনীদের উপহার দেওয়ার কথাই বুঝানো হয়েছে। কিন্তু কী পরিমাণ গোশত অন্যকে দান-সাদকা বা হাদিয়া দেবে সে সম্পর্কে কুরআন এবং সুন্নাহতে কোনো সুস্পষ্ট বিধান দেওয়া নেই।

তবে ওলামায়ে কেরাম কুরবানির পশুর গোশত বিতরণের একটি মতামত পেশ করেছেন। আর তাহলো-

কুরবানির পশুর গোশত তিন ভাগ করে নিজেদের জন্য এক ভাগ রাখা; গরিব-অসহায়দের মাঝে এক ভাগ দান করা এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে এক ভাগ বণ্টন করা মোস্তাহাব।’

ইসলামিক স্কলারদের নির্দেশনা অনুযায়ী কুরবানির গোশত বণ্টন করা উত্তম। অতঃপর হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী দুর্ভিক্ষ কিংবা সমাজে অভাব-অনটন না থাকলে যতদিন ইচ্ছা ততদিন কুরবানির গোশত সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে। হাদিসে এসেছে-

২. হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্নিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে আমরা মদিনায় ফিরে আসা পর্যন্ত কুরবানির গোশত সঞ্চয় করে রাখতাম।’ (বুখারি)

সুতরাং যদি কেউ কুরবানির গোশত তিন দিনের বেশি রেখে খেতে চায় তবে তা সম্পূর্ণরূপে বৈধ। এটা নিয়েও বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরবানির গোশত বণ্টন সম্পর্কে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকা থেকে মুক্ত রাখুন। যারা কুরবানির গোশত গরিব-মিসকিনকে দিতে বিরত রয়েছেন; তারা সঞ্চয় করা গোশত থেকে গরিব-দুঃখী ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে গোশত বণ্টন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com