রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৭ অপরাহ্ন

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা উপহার দিলেন রাসিক মেয়র

জুয়েল খান
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১
  • ২৫৭ বার পঠিত

রাজশাহী প্রতিনিধি : করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন/সৎকার কাজে নিয়োজিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন রাজশাহীর ৭৬জন স্বেচ্ছাসেবীকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রণোদনা উপহার প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুুপুর আড়াইটায় নগর ভবনের সিটি হলরুমে স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে প্রণোদনার অর্থ তুলে দেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। ৭৬জন স্বেচ্ছাসেবীর প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফন/সৎকারে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা আমাদের সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশ যখন তার পরিবার ও স্বজনরা ফেলে চলে গেছে, তখন স্বযত্নে নিজের পরিবারের সদস্য মনে করে সেই লাশ পরম মমতায় দাফন করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৃত্যু ভয়কে জয় করে মানবিক ও মহত কাজটি করে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। আমি বিশ^াস করি এই কাজের জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে তারা পুরস্কৃত হবেন। মহতি এই কাজে অতীতেও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পাশে ছিলাম, আগামীতেও পাশে থাকবো। দেশের যে কোন সংকটময় মুহুর্তে আগামীতেও নাগরিকদের পাশে থাকবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন এই প্রত্যাশা করি।

মেয়র আরো বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই করোনা মোকাবেলায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। জনসচেতনতা সৃষ্টি, সরকারি সহায়তা ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থদের দফায় দফায় খাদ্য ও অর্থ সহায়তা প্রদান, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা, করোনায় আক্রান্তদের ওষুধ ও খাদ্য প্রদান করা হচ্ছে। করোনা রোগীদের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ভেন্টিলেটর ও হাই ফ্লো ন্যাজার ক্যানোলা প্রদান করা হয়েছে। আগামীতেও এভাবেই মানুষের পাশে থাকবো।

অনুষ্ঠানে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূক্তি ব্যক্ত করেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, রাজশাহীর একাদশ শ্রেণীর ছাত্র আহিদ উল হক ও গৃহীনী মোনালিসা জলি। আহিদ উল হক বলেন, আমি প্রায় ৯৫টি লাশ দাফনে অংশ নিয়েছি। আমার পরিবারের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় কাজটি করা সম্ভব হয়েছে।

মোনালিসা জলি বলেন, প্রথম অবস্থায় নারীদের লাশ দাফনে কাউকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি জানতে পেরে আমি লাশ দাফনের কাজে নিয়োজিত হই। একেকটা লাশ দাফন মানে একেকটা গল্প, দুলর্ভ অভিজ্ঞতা। হাসপাতালের মর্গে একজন নারীর মরদেহ রাখা হয়েছিল, তাকে শেষবারের মতো দেখার কেউ ছিল না। তবে মরদেহের হাতে থাকা একটি আংটি নিতে এসেছিলেন লাশের এক স্বজন। করোনায় আক্রান্ত স্বামীর সেবা করতে গিয়ে মারা গেছেন স্ত্রী, এমন লাশ দাফনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। দুই ধরনের চিত্রই আমরা দেখেছি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও বারিন্দ মেডিকেল কলেজের সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মঞ্জুরুল হক এবং উপদেষ্টা রাবির প্রফেসর ড. শহিদুল আলম। তারা বলেন, করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে যখন করোনায় মৃত ব্যক্তিকে দাফনে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন এগিয়ে আসেনি, সেই সময়েও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীরা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাশ দাফন করেছে। একাজে শুরু থেকেই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন মহোদয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, এজন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ। মহতি কাজে উৎসাহ প্রদানে প্রণোদনার অর্থ প্রদান করায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাসিক মেয়রের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড.এবিএম শরীফ উদ্দিন। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, সচিব মোঃ মশিউর রহমান, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন রাজশাহীর পরিচালক মোঃ কায়সার পারভেজ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com