বিডি ঢাকা ডেস্ক
মদনপুর-জয়দেবপুর (ঢাকা বাইপাস) এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মদনপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে নয়াপুর বাজার হয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সবচেয়ে বেশি গর্ত ও খানাখন্দে ভরে গেছে। এতে এ সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। একটু বৃষ্টি হলেই খানাখন্দগুলোতে পানি জমে রাতের বেলা চালক ও যাত্রীদের জন্য মরণফাঁদে পরিনত হয়।
প্রায় সময় বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় যানবাহন খানাখন্দে পড়ে উল্টে যাচ্ছে। এতে যাত্রীরা মারাক্তক আহত হচ্ছেন এবং সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বড় বড় খানাখন্দের কারণে অনেক সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পরিবহনের চালক ও যাত্রীরা। জরুরি ভিত্তিতে এ সড়কের গর্ত ও খানাখন্দগুলো মেরামত করার জোর দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার সকালে নয়াপুর এলাকায় সরেজমিন গিয়ে খানাখন্দের কারণে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। টানা কয়েকদিন বৃষ্টির কারনে খানাখন্দে পানি জমে থাকায় এ সড়কে চলাচলরত যানবাহন ধীরগতিতে চলচ্ছে। এতে প্রায়ই সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট ও দূর্ঘটনা।
জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়েকর মদনপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়েছে জয়দেবপুর সড়ক এশিয়ান হাইওয়ে। এ মহাসড়ক দিয়েই চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান, লরি, ট্রাক, যাত্রীবাহি বাস, সিএনজি ও অটোরিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটি ব্যবহার করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, গাজীপুরের জয়দেবপুর হয়ে বিভিন্ন জেলায় যানবাহন যাতায়াত করছে। এদিকে মদনপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত রিক্সা, অটো ও যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে। ইদানীং এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত আর খানাখন্দে ভরে গেছে। বিশেষ করে মনদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সোনারগাঁয়ে নয়াপুর হয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন ব্রীজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৩-৪ মাস ধরে অংখ্য বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হলেও কর্তৃপক্ষ মেরামত করছে না।
নয়াপুর বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া বলেন, গত ৪ মাস ধরে এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পিচ ঢালাই, ইট সুরকি বের হয়ে এসেছে। এ গর্তগুলো রাতের বেলা মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ গর্ত ও খানাখন্দগুলো মেরামত না করায় প্রায়ই ছোট বড় যানবাহনগুলো উল্টে যাচ্ছে। যে কোন সময় বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, গত ১ অক্টোবর মঙ্গলবার নয়াপুর বাজারের সামনে একটি মিনি ট্রাক গর্তে পড়ে উল্টে যায়। এ সময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এভাবেই অটো, ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও সিএনজিসহ যানবাহন গর্তে উল্টে যাচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ খানাখন্দগুলো মেরামত করছে না।
রিয়াজ নামের এক ঔষধ কোম্পানি কর্মকর্তা বলেন, প্রায় ১ বছর ধরে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছি কিন্তুক এরকম গর্ত কখনো দেখি নাই। মদনপুর থেকে নয়াপুর আসতে যেখানে ১০ মিনিট সময় লাগার কথা সেখানে গর্তের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়ে এক ঘন্টা সময় লাগে নয়াপুর আসতে। দ্রুত সংস্কারের দাবী জানান তিনি।
এ সড়কের কাভার্ডভ্যান চালক সোহেল রানা বলেন, খান্দাখন্দের কারণে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব গর্তে অনেক সময় গাড়ি আটকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় খানাখন্দগুলো বিপজ্জনক অবস্থায় থাকছে। জরুরিভিত্তিতে এ সড়কের খানাখন্দ ও গর্তগুলো মেরামত করার দাবি জানাচ্ছি।
অটোরিকশা চালক মাসুম মিয়া জানান, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সড়কে বড় বড় গর্তে সৃষ্টি হয়ে আছে। এসব গর্তে গাড়ি পড়ে কয়েকবার দূর্ঘটনার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম এবং যাত্রীরাও আহত হয়েছে। সড়কটি সংস্কারের জন্য এখনও কেউ এগিয়ে আসেনি।
মদনপুর এলাকার বাসিন্দা কাউসার বলেন, এ সড়কের আশপাশে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ সড়ক দিয়ে শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। খান্দাখন্দের কারণে এ সড়কে প্রায় সময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে যাত্রীরা নানা দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হচ্ছেন।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নারায়ণগঞ্জ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী সাহানা ফেরদৌস এ সড়কের খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ রাস্তাটি আমার অধীনে না। এটি হচ্ছে ঢাকা বাইপাস প্রকল্পের অধীনে। তাদের সাথে আমি কথা বলেছি এবং মিটিংও করেছি। তারা বলেছে তাদের টিম সংস্কারের জন্য কাজ করছে।