বিডি ঢাকা ডেস্ক
কনকনে শীতে বিপর্যস্ত উত্তরাঞ্চলের জনজীবন। উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় জেঁকে বসেছে শীত। এ জেলায় গত তিন দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। ভোগান্তি বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত এখানকার মানুষের জীবন। হিমেল হাওয়ায় বিপদে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। জেলার হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় লোকজনের চলাচল একবারেই সীমিত। নিতান্ত প্রয়োজন কিংবা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষেরই কেবল দেখা মিলছে পথে ঘাটে। প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে শ্রমিক, রিকশাচালক, ফেরিওয়ালাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ পেটের তাগিদে কাজে বের হয়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, কুয়াশার সঙ্গে মৃদু বাতাসে শীতে কাতর মানুষ বাড়ি কিংবা চায়ের দোকানের চুলার আগুনে উষ্ণতায় শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সেইসঙ্গে চায়ের দোকানে চায়ের চুমুকে হাড় কাঁপানো শীত থেকে উষ্ণতা খুঁজছেন।
গাইবান্ধা সরকারি কলেজের মাস্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী আরিফা আকতার বলেন, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে হয়েছে। শীতবস্ত্র নিয়ে দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।’
উত্তর হরিণ সিংহা গ্রামের বাসিন্দা আজাহার আলী বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। মাঝে মাঝে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ে। হালকা বাতাসে চলাফেরা করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’
রিকশাচালক কেরামত আলী বলেন, ‘গত কয়েকদিনে ঠান্ডা বেড়েছে। শীতের বাতাসে হাত-পা টাটায়। আমাদের কম্বলের খুব প্রয়োজন।’
আকন্দ পাড়ার উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি খুরশীদ আলম বলেন, ‘উত্তরের এ জেলায় প্রতি বছরই শীতে দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। সরকার ও দানশীল ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা উচিত।’
এদিকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
নাজনীন নামে এক অভিভাবক জানান, ‘গতকাল রাতে হঠাৎ শিশুর বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর স্যালাইন চলছে। এখন কিছুটা ভালো আছে।’
এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ উর রহমান জানান, ‘কয়েকদিন থেকে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।’ শিশু ও বয়স্কদের শীতে বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমদ বলেন, ‘জেলায় শীতার্থদের জন্য প্রায় অর্ধলাখ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।’