বিডি ঢাকা ডেস্ক
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর ও নজরপুর গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় আমবাগানের সামনে দস্যুতার ঘটনায় জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে লাল চাঁদ নামের একজন ঘটনার কয়েক দিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এরা সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ছিনতাই, দস্যুতাকারী দলের সদস্য। গ্রেপ্তারকৃত ৩ জনের স্বীকারোক্তিতে ছিনতাইকৃত একটি অটোরিকশা ও একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন- গত ১১ মার্চ অটোভ্যান চালক মো. রফিকুল ইসলাম (৪৯) গোমস্তাপুর উপজেলার জগতগ্রামে বিয়ের বাড়িতে রিজার্ভ ভাড়া যায়। বিয়ে বাড়ি থেকে নাচোল উপজেলার আঝইর গ্রামে ফেরার পথে সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টার দিকে গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর ও নজরপুর গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায় একটি আমবাগানের সামনে পৌঁছালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত, মুখে মাস্ক ও কালো কাপড় বাঁধা ৩ থেকে ৪ জন অজ্ঞাতনামা লোক পথরোধ করে। এসময় তার ভ্যানে থাকা ৭ জন যাত্রীকে এলোপাথাড়ি মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক অটোচার্জার ভ্যান, যার আনুমানিক দাম ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা, ছিনিয়ে নেয়। এসময় ছিনতাইকারীরা চালকসহ ভ্যানে থাকা যাত্রীদের জিম্মি করে ঘটনাস্থল হতে ৫০০ গজ দক্ষিণ পশ্চিমে আমবাগানের ভেতরে নিয়ে গিয়ে ভ্যানচালকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ও একটি স্মার্টফোন; ভ্যানযাত্রী মো. মাজেদ আলীর (৪৫) কাছে থাকা নগদ ৩ হাজার ৬০০ টাকা, একটি বাটন মোবাইল ফোন; যাত্রী মোসা. মর্জিনা বেগমের (৪৫) কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও ১টি নাকফুল যার ওজন ৪ আনা, ১টি বাটন মোবাইল ফোন, নগদ ১০০ টাকা; যাত্রী মোসা. সামিরা খাতুনের (২৪) কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও একটি নাকফুল, যার ওজন ৪ আনা, ১টি বাটন মোবাইল ফোন; যাত্রী মোসা. রেখা বেগমের (৪৫) কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ও একটি নাকফুল, যার ওজন ৪ আনা, ১টি বাটন মোবাইল ফোনসহ সর্বমোট ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। আহতরা গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, এ ঘটনায় গোমস্তাপুর থানায় দস্যুতার একটি মামলা রুজু হয়। এই মামলার অজ্ঞাতনামা আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও গোমস্তাপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে জোর তৎপরতা শুরু করে। এরই প্রেক্ষিতে সম্মিলিত একটি যৌথ চৌকশ টিম বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের সহায়তায় ঘটনার পর হতেই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে দস্যুতার সাথে জড়িত রানীবাড়ী চাঁদপুর গ্রামের এনামুল হক ভেনচুর ছেলে মো. দেলোয়ার হেসেন (২৪), শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. ওয়াসিম (২৮), পলাশবাড়ী গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দীনের ছেলে মো. লাল চাঁদ (৩২), রানীবাড়ী চাঁদপুর গ্রামের তহুরুল ইসলামের ছেলে তৌহিদ আলী সুজন (২৬), গঙ্গারামপুর মোবারকপুর গ্রামের মৃত সাইফুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে মো. দিনুল ইসলাম (৪৩), দানিয়ালপুর মোবারকপুর গ্রামের মো. আনারুল (৫২) ও রহমত। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাদের দেয়া তথ্যমতে ছিনতাইকৃত অটোরিকশা ভ্যান ও স্মার্ট মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ছিনতাইয়ের সঙ্গে তিনজন সরাসরি জড়িত। এই তিনজন আদালতে স্বীরোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। বাকিরা ছিনতাইয়ের মালামাল ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। অন্যদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, এদের মধ্যে মো. লাল চাঁদ ঘটনার কয়েক দিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এরা ঢাকা, গাবতলীসহ দেশের বিভন্ন স্থানে ছিনতাই করে।