অনলাইন নিউজ : ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ইট-পাথরের শহর ছেড়ে গ্রামে গেছেন রাজধানীবাসী। আবার কেউ কেউ নানা প্রয়োজনে থেকে গেছেন। এসময় ঢাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় উপচেপড়া দেখা যায়। ঈদের ছুটি কাটাতে এসব বিনোদন কেন্দ্রে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে এসেছেন অনেকেই। বিশেষ করে অভিভাবকদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছে শিশুরা।
সোমবার (১১ জুলাই) রাজধানীর শ্যামলী শিশু মেলায় গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। ছয় মাস বয়সী শিশু থেকে ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধরাও এসেছেন শিশু মেলায়। শিশুদের আনন্দ দেখে আনন্দ পাচ্ছেন তারাও। ঘরে থাকা শিশুরা একটু খেলাধুলা কিংবা খোলা জায়গায় বিনোদন পেলে কতটা মেতে উঠে, তার দেখা মেলে শিশু মেলায়।
সাত বছর বয়সী এক ছেলে ও দুবছর বয়সী এক মেয়ে নিয়ে শিশু মেলায় এসেছেন বাবা কবির হোসেন ও মা হোসনে আরা। গণমাধ্যমকে তারা বলেন, এবার বাড়িতে যাওয়া হয়নি। ঢাকাতেই থেকে গেছি। ভাবলাম সন্তানদের নিয়ে একটু বের হই। ছুটি শেষ হলে তো আর এমন ফাঁকা ঢাকা পাওয়া যাবে না।
শ্যামলী শিশু মেলায় ক্রেজি কার, মিনি ট্রেন, মোটর রাইড, ব্যাটারি কার, ওয়ান্ডার হুইল, মেরি গো রাউন্ড, হানি সুইং, প্যারাট্রুপার, বাম্পার কারসহ প্রায় ৩০টির মতো গেম রয়েছে শিশুদের জন্য। এর কোনোটিতে শিশুদের জন্য একা চড়ার নিয়ম রয়েছে। আবার কোনোটিতে শিশুদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে অভিভাবকরাও চড়তে পারবেন। তেমন সক্ষমতা তৈরি করেই সেসব তৈরি করা হয়েছে। তবে মেলায় প্রবেশের টিকিট মূল্য নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন বেশ কয়েক জন অভিভাবক।
নিলিমা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, ভাবছিলাম এক টিকিটেই সব। এখন দেখি সব জায়গায় টাকা খরচ করতে হয়। যদি খরচটা আরও কম হতো, তাহলে প্রতি মাসে দু-একবার করে আসতে পারতাম।
এ বছর জানুয়ারি পর্যন্ত শিশু মেলায় প্রবেশে টিকিট মূল্য ছিল জনপ্রতি ৬০ টাকা। তবে জানুয়ারিতে বাড়িয়ে তা করা হয়েছে ১০০ টাকা। এছাড়াও ভেতের প্রতিটি গেমসের জন্য আলাদা ৫০ টাকা গুণতে হয়। ৩০টি খেলার প্রতিটি খেলায় যদি একটি শিশু চড়ে, তবে তার জন্য একজন অভিভাবকে গুণতে হবে দেড় হাজার টাকা। যদি তার সঙ্গে একাধিক বাচ্চা থাকে তাহলে টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিশু মেলার ম্যানেজার মো. রাকিবুল চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, গত দুবছর করোনার কারণে আমাদের লোকসান হয়েছে। তাই এবার টিকিটের দাম বাড়ানো হয়েছে। করোনার সময়ে মেলা বন্ধ থাকলেও স্টাফদের বেতন ও প্রতিটি গেমসের মোটরগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। প্রতিটির মোটরের দামও অনেক। আমাদের তো পুষিয়ে উঠতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে সার্বক্ষণিক কাজ করেন ৯০ জন। ঈদ উপলক্ষে বেশি মানুষজন হবে, এজন্য ২৫ জন অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও শিশু মেলায় আগতদের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সিসিটিভিতে পর্যবেক্ষণ করছি।
কেমন মানুষ আসছে জানতে চাইলে তিনি বলে, মানুষ কম আসছে। বিকেলে হয়তো ভিড় হয়েছে। কিন্তু সকাল ১০টায় খুলে দেওয়া হয়েছে। সারাদিন ফাঁকাই ছিল।