শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন

ছোট্ট একটি আরবি বাক্য কথা-কাজে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলার গুরুত্ব

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১
  • ৫৩৪ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ : ছোট্ট একটি আরবি বাক্য ‘ইন শা আল্লাহ- إِن شَاء اللَّهُ’; ইসলাম ও মুসলমানের জন্য এ বাক্য ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে আয়াত নাজিল করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে কোনো কথা ও কাজে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলার নির্দেশ দিয়েছেন। ‘ইন শা আল্লাহ’ বলে কথা ও কাজ শুরু করার কারণও আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে এভাবে আয়াত নাজিল করে তুলে ধরেছেন-

وَمَا تَشَاؤُونَ إِلَّا أَن يَشَاء اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ

ভবিষ্যতের কোনো কথা কিংবা কাজ করার আগে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলা— ইসলাম ও মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ একটি রীতি। এ আয়াত থেকেই প্রমাণিত যে, এটি আল্লাহ তাআলা নিজেই শিখিয়েছেন। অন্য আয়াতে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলে কথা ও কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মুমিন তার জীবনের প্রতিটি কাজেই আল্লাহকে স্মরণ করবে। কারণ সে তার প্রতিটি কথা ও কাজে একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করবে; নিজের শক্তি-সামর্থ্য কিংবা অন্যান্য কোনো উপায়-উপকরণের ওপর নয়।

তাইতো মুমিন মুসলমান ভবিষ্যতের কোনো কাজের কথা বলতে গিয়ে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলে থাকেন। কিন্তু এই ইন শা আল্লাহ কী? এর অর্থইবা কী? ‘ইন শা আল্লাহ’ শব্দের অর্থ হলো- যদি আল্লাহ তাআলা চান। অর্থাৎ যদি আল্লাহ চান তাহলে আমি এই.. এই.. কাজ করব কিংবা এই.. এই.. কাজ হবে।ইসলামে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আদব।

কুরআনে ‘ইন শা আল্লাহ’র ব্যবহার

বাস্তব জীবনে ইন শা আল্লাহর ব্যবহার কেমন হবে, আল্লাহ তাআলা নিজেই কুরআনে তা তুলে ধরেছেন এভাবে-

 لَقَدْ صَدَقَ اللَّهُ رَسُولَهُ الرُّؤْيَا بِالْحَقِّ لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِن شَاء اللَّهُ آمِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُؤُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَلِكَ فَتْحًا قَرِيبًا

আল্লাহ তাঁর রাসুলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছেন। যদি আল্লাহ চানতো তোমরা অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে। নিরাপদে মস্তকমুণ্ডিত অবস্থায় এবং চুল কর্তিত অবস্থায়। তোমরা কাউকে ভয় করবে না। অতঃপর তিনি জানেন যা তোমরা জান না। এছাড়াও তিনি দিয়েছেন তোমাদেরকে একটি আসন্ন বিজয়।’ (সুরা ফাতহ : আয়াত ২৭)

কুরআনে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলার নির্দেশ

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে রাসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইন শা আল্লাহ বলার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-

وَلَا تَقُولَنَّ لِشَيْءٍ إِنِّي فَاعِلٌ ذَلِكَ غَدًا إِلَّا أَن يَشَاء اللَّهُ وَاذْكُر رَّبَّكَ إِذَا نَسِيتَ وَقُلْ عَسَى أَن يَهْدِيَنِ رَبِّي لِأَقْرَبَ مِنْ هَذَا رَشَدًا

(হে রাসুল!) আপনি ‘ইন শা আল্লাহ’ বলা ব্যতিত কোনো জিনিসের ব্যাপারে কখনো একথা বলবেন না যেআমি আগামীকাল এ কাজটি করবো৷ যদি ভুলে এমন কথা মুখ থেকে বেরিয়ে যায়তাহলে সাথে সাথেই নিজের রবকে স্মরণ করুন এবং বলুন- আশা করা যায়আমার রব এ ব্যাপারে সত্যের নিকটতর কথার দিকে আমাকে পথ দেখিয়ে দেবেন৷’ (সুরা কাহফ : আয়াত ২৩-২৪)

‘ইন শা আল্লাহ বলার গুরুত্ব ও ফজিলত

‘ইন শা আল্লাহ’ বলার মাধ্যমে বান্দার বিনয়, আকুতি এবং আল্লাহ তাআলার উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল বা ভরসা প্রকাশ পায়। ভবিষ্যতের কোনো কাজের ইচ্ছা পোষণের ক্ষেত্রে, আল্লাহর নাম নেয়া থেকে বিরত থাকলে বান্দার ঔদ্ধত্য-অহংকার প্রকাশ পায়। যা তার কথা ও কাজকে বরকতহীন বানিয়ে দেয়।

তাই সব মুমিন মুসলমানের উচিত, ভবিষ্যতের যে কোনো কথা বলা ও কাজের করার ঘোষণা দেওয়ার আগে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলার আমলকে একান্ত অভ্যাসে পরিণত করা। নিজ নিজ পরিবারের শিশু-কিশোর; ছোট-বড় সব সদস্যদের এ কুরআনিক আদব ও নির্দেশকে অভ্যাসে পরিণত করার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা, বিশ্বাস ও অনুভূতির সঙ্গে ‘ইন শা আল্লাহ’ বলার এবং এটাকে সব সময়ের জন্য অভ্যাসে পরিণত করে তার নির্দেশ বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com