সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : টানা বৃষ্টি আর নেমে আসা উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সুনামগঞ্জবাসীর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই বন্যার কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে বানভাসি মানুষের। পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন হাওর জনপদের বাসিন্দারা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে নদ-নদের পানি। নিম্নাঞ্চল ছাড়াও সুনামগঞ্জ শহরের বাসা-বাড়িতে ঢুকে পড়ছে বন্যার পানি। এর পলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-দিঘলী এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সেখান দিয়ে কোনো দূরপাল্লার গাড়ি আপাতত যেতে পারবে না। তবে ছোট যানবাহন, মোটরসাইকেল চলতে পারবে।
সর্বশেষ শুক্রবার জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার, সিলেটে ৭০ সেন্টিমিটার এবং সুনামগঞ্জে ১২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বই ছিল।
এদিকে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের মধ্যবাজার, আরপিন নগর, নবীনগর, পশ্চিম বাজার, পূর্ব নতুন পাড়া মরাটিলাসহ বিভিন্ন এলাকায় গত বন্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে এবারের বন্যা। যে সড়কে বুধবার পর্যন্ত গাড়ি চলছিল সেই রাস্তায় এখন চলছে নৌকা। এছাড়া পানিবন্দি হয়ে আশেপাশের বিদ্যালয়গুলোতে আশ্রয় নিয়েছে স্থানীয়রা। এবারের বন্যাকে ২০০৪ সালের বন্যার সঙ্গে তুলনা করছেন অনেকে।
অপরদিকে, উজানের ঢলে তাহিরপুর বিশ্বম্ভপুর উপজেলার সঙ্গে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা সাথেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সদর উপজেলার। সুনামগঞ্জের শহরে এখন একতলা কোনো বাড়িতে পানি উঠতে বাকি নেই। সদরের পাশাপাশি দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলা ভাসছে বন্যায়।