বিডি ঢাকা ডেস্ক
ডিমের মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যস্বত্বভোগীরা বড় সমস্যা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য দূর করতে উৎপাদকদের সমবায় সমিতি গঠন করতে হবে। এর মাধ্যমে উৎপাদকেরা সমবায়ের মাধ্যমে আড়তদারদের সরাসরি ডিম সরবরাহ করতে পারবে এক্ষেত্রে উৎপাদক-আড়তদার লাভবান হবেন এবং ভোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে ডিম ক্রয় করতে পারবে।
শনিবার (১৯শে অক্টোবর) দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাবনা জেলার মৎস্যজীবী ও প্রাণিসম্পদের প্রান্তিক খামারীদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।
তিনি আরও বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশে অত্যাধিক গরম ও শীত হচ্ছে এরফলে ডিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারনেও অনেক খামার নষ্টের ফলে ডিমের উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে।
খামারিরা মুরগির খাদ্যে ও বাচ্চার মূল্যের উর্দ্ধগতির বিষয়ে অবগত করলে উপদেষ্টা বলেছেন, আপনারা স্বাধীন খামারি হবেন কন্ট্রাক্ট খামারি হবেন না। কন্ট্রাক্ট ফার্মিং এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছে মত ব্যবসা করে যাচ্ছে, তারা লাভবান হচ্ছে কিন্তু প্রকৃত খামারিরা লাভবান হচ্ছে না। ফিডের ক্ষেত্রে কয়েকটি কোম্পানির হাতে সবাইকে জিম্মি হতে দেয়া হবে না – এজন্য সরকার ব্যবস্হা গ্রহণ করবে।
উপদেষ্টা নারী উদ্যোক্তাদের শুধু পোল্ট্রি নয়-দেশী মুরগী পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশী মুরগী ও ডিমের উৎপাদন বাড়ালে অর্থনৈতিকভাবে আরও বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। আগে গ্রামীণ নারীরা হাঁস-মুরগি পালন করতেন। নিজেরা গ্রামেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। এতে তারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারতেন। সেই অবস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
পাবনা জেলায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে প্রচুর সম্ভাবনার উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেছেন, সম্ভাবনার পিছনে যে সমস্যা রয়েছে তা সরকার দূর করতে চায়। যারা ডিম, মাছ,মাংস সরবরাহ করে আমাদের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছেন তাদের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আপর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, পাবনা জেলাতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রক্ষায় ও সহায়তা করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া প্রকৃত মৎস্যজীবীর নামে অন্য কেউ যেন সুবিধা না পায় তা কঠোরভাবে দেখভালের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এ. কে. এস. এম মুশাররফ হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম,পাবনার বিভিন্ন উপজেলার মৎস্যজীবী ও খামারিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।