বিডি ঢাকা ডেস্ক
ভারতের সাথে তিস্তার পানি চুক্তি না হলেও নদীতে জমানো আর লিকেজ পানি দিয়েই ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে চায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ইতোমধ্যে তিস্তার কমান্ড এরিয়ার ছোট বড় সব ধরনের খালে ছাড়া হয়েছে পানি। আর এ ভূ-উপরিস্ত তিস্তার উর্বর পানি পেয়ে খুশিতে বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত কৃষক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি, আগামী বছরের মধ্যেই তিস্তার প্রধান, সেকেন্ডারি, টার্সিয়ারী খালসহ ছোট বড় সব ধরনের খাল পুণ:খনন ও সংস্কার হলেই ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে মিলবে সেচ সুবিধা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পানিতে টইটুম্বুর তিস্তার প্রধান খালসহ সেকেন্ডারি, টার্সিয়ারী আর ছোট বড় ধরনের খাল। এ পানিতেই উত্তরের রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ১২টি উপজেলায় ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে দেয়া হচ্ছে সেচ সুবিধা। ইতোমধ্যে ভূ-উপরিস্ত তিস্তার উর্বর পানি দিয়েই রোপণ করা হচ্ছে বোরো ধানের চারা।
নীলফামারী সদরের রামনগর ইউনিয়নের চাঁদেরহাট বিশমুড়ি এলাকার কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, এ বছর জমিতে আগাম পাওয়া যাচ্ছে তিস্তার পানি। আমরা বোরো ধানের চারাও রোপণ করতে শুরু করেছি। টার্সিয়ারী ও সেকেন্ডারি খালগুলো সংস্কারের ফলে পানির অপচয়ও কম হচ্ছে। আর এই পানিতে আবাদ করলে সেচ পাম্পের চেয়ে খরচ অনেক কম হয়। এছাড়াও এই পানি উর্বর হওয়ায় সারও কম লাগে। এতে অর্থ সাশ্রয় হয়।
তিস্তা কমান্ড এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম, আবুল হোসেনসহ অনেক কৃষক বলেন, তিস্তার পানিতে উৎপাদন খরচ যেমন কম, তেমনি এই পানির উর্বতায় রাসায়নিক সারও হয় সাশ্রয়। তবে শেষ পর্যন্ত পানি পাওয়া গেলে বাড়বে উৎপাদন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় পানির প্রাপ্যতা বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার কমান্ড এলাকায় এবছর বাড়ানো হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর জমি। তিস্তার জমানো পানি আর চোয়ানো পানি দিয়েই পুরো মৌসুমে সফলভাবে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়াও তিস্তার ভূ-উপরিভাগের পানি দিয়ে সেচ দেয়ায় ফলে এ অঞ্চলের ভূগর্ভের পানির স্তর রিচার্জ হয়ে অনেকটা উপরে উঠে এসেছে। সেচ পাম্প বসিয়ে এই পানি থেকে সহজেই পাওয়া যাবে সেচ সুবিধা। সেই সাথে রক্ষা পায় পরিবেশের ভারসাম্যও।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সৈয়দপুর ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, গত বছর তিস্তার কমান্ড এলাকার ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে কৃষকেরা সেচ সুবিধা পেয়েছে। এ বছর তা বাড়িয়ে চলতি বোরো মৌসুমে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। তবে পুরো বোরো মৌসুমে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে সরকারের সাশ্রয় হবে আট থেকে দশ কোটি টাকার ডিজেল ও সার। আর এ থেকে বাড়তি ফসল উৎপাদন হবে ২৬ হাজার মেট্রিকটন ধান। যার বাজার মূল্য প্রায় ৯০কোটি টাকা। যা জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।