বিডি ঢাকা ডেস্ক
গত কয়েকদিন ধরে চলমান অসহনীয় তাপপ্রবাহে পিরোজপুরবাসীর জীবনযাত্রা প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল। প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল অবস্থায় ছিল সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পশু-পাখি পর্যন্ত। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে পিরোজপুরে স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। ফলে তাপমাত্রার সঙ্গে গরমও কিছুটা কমেছে।
সোমবার (১২ মে) বিকেল ৪টার দিকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয় বজ্র ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি। তার আগ মুহূর্তেও সকাল থেকে ছিল প্রচণ্ড রোদের তাপ। বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ আকাশ ঢেকে যায় কালো মেঘে, পুরো এলাকায় নেমে আসে গুমোট ভাব। জনমনে বাড়তে থাকে বৃষ্টির প্রতীক্ষা।
অবশেষে, এক ঘণ্টার মধ্যেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে নামে সেই আকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। দীর্ঘদিনের কাঠফাটা রোদ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন পিরোজপুরবাসী। খেটে খাওয়া মানুষের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। প্রকৃতির এই পরশে প্রাণ ফিরে পেয়েছে জনজীবন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান তারিফ বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল। গরমে অতিষ্ঠ ছিল জনজীবন। আজকের বৃষ্টি স্বস্তি ফিরিয়েছে সবার মধ্যে।
রিকশাচালক শহিদুল শরীফ বলেন, কয়েকদিন যাবৎ তীব্র তাপদাহে জীবন শেষ হওয়ার অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল। বিকেলে বৃষ্টি হওয়ায় পরিবেশটা কিছুটা ঠান্ডা হয়েছে। আর কিছু হোক আর না হোক গরম তো কমেছে।
নির্মাণ শ্রমিক মো. মামুন হোসেন বলেন, আমাদের কষ্টের কাজ। তার ওপরে যে তাপ আর গরম, শরীর যেন পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কি আর করা কাজ না করলে খাব কি, কাজ তো করতেই হবে। আজকের বৃষ্টিতে আমাদের কাজের কষ্ট অনেক কমিয়ে দেবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মূলত এই বৃষ্টি জনজীবনে যেমন স্বস্তি ফিরিয়েছে তেমনি কৃষিতে বেশ উপকার হবে। বর্তমানে আউশ ধানের মৌসুম এই বৃষ্টিতে কৃষকদের বেশ উপকার হবে।
এদিকে গত কয়েকদিনের তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোক, পানিশূন্যতা ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যার রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল।
এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) সুরঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, কয়েকদিনের তাপদাহের কারণে আমাদের জেলা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছিল। আজকের বৃষ্টিতে তাপপ্রবাহ কিছুটা কমবে। আশাকরি, গরমজনিত রোগীর সংখ্যাও কমবে।