শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন

তীব্র দাবদাহে নষ্ট হচ্ছে ওষুধ, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
  • ১৫ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

তীব্র দাবদাহ চলছে সারা দেশে। জীবন রক্ষাকারী ও জরুরি ওষুধের ওপরেও দেখা দিয়েছে এর মারাত্মক প্রভাব। অতিরিক্ত গরমে ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে স্বাস্থ্যসেবা। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য ওষুধও গরমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা ও বিক্রেতারা।

সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রায় ৯০ শতাংশই ওষুধই ১৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য। তাপমাত্রার উঠানামা হলেই ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। ওষুধের গুণগতমান ঠিক রাখতে সাধারণত আলোর আড়ালে ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে রাখতে হয়।

জানা গেছে, নেত্রকোনার পূর্বধলা সদর, শ্যামগঞ্জ, হোগলা, জারিয়া মিলিয়ে ছোট বড় প্রায় দেড়শতাধিক ফামের্সি রয়েছে। এসব ফার্মেসির কোনোটিতেই এই তীব্র গরমে ওষুধ সংরক্ষণের বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে ওষুধের গুণগতমান ঠিক রেখে ওষুধ বিপণন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবে বড় বড় ফার্মেসিগুলোতে টিকা ও ইনসুলিন জাতীয় ওষুধ সংরক্ষণের জন্য রেফ্রিজারেটরের ব্যবস্থা থাকলেও বাকি ওষুধগুলো সাধারণভাবেই রাখা হয়।

ওষুধ ক্রেতা মো. নূরুজ্জামান জানান, ওষুধের প্যাকেটের গায়ে লেখা সহনীয় তাপমাত্রার চেয়ে বর্তমানে এলাকায় অনেক বেশি তাপমাত্রা বিরাজ মান। রয়েছে বিদু্যতের দীর্ঘ লোডশেডিংও। এই অবস্থায় ওষুধ নষ্ট হয়ে কার্যকারিতা হারানো স্বাভাবিক। আর এই নষ্ট ওষুধ সেবন করে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এই বিষয়টি মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

উপজেলা সদরের উত্তম মেডিকেল হল নামীয় ফার্মেসির মালিক উত্তম কুমার রায় বলেন, এই তীব্র গরমে আমরা ফ্যান চালিয়ে চেষ্টা করছি ওষুধের মান ঠিক রেখে সংরক্ষণ এবং বিক্রি করতে। তবে ক্রেতার হাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে ওষুধের মান নষ্ট হতে পারে। কারণ সব ক্রেতা ওষুধ রাখার যথাযথ তাপমাত্রা মেনে সংক্ষরণ করতে পারেন না।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিস্নউএইচও) নিয়ম অনুযায়ী, ওষুধের কার্যকারিতা রক্ষায় পরিবহণ, বিপণন, মজুত ও সংরক্ষণের প্রতিটি স্তরকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। সাধারণ স্টোরেজ বা সংরক্ষণের তাপমাত্রার পরিসীমা ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওষুধের জন্য ঘরের আদর্শ তাপমাত্রা হচ্ছে ৬৮ ও ৭৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ২০ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতল অবস্থায় হলো ৪৬ থেকে ৫৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৮ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওষুধের প্যাকেটের গায়েও ওষুধ সংরক্ষণের জন্য সহনীয় মাত্রা উলেস্নখ করে নির্দেশনা দেওয়া থাকে। কিন্তু ওষুধ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এসব নির্দেশনা খুব বেশি মানা হচ্ছে না। পরিবহণের ক্ষেত্রেও দেখা যায় তীব্র গরমে এসি ছাড়া গাড়িতে ওষুধ পরিবহণ করতে। ফলে তীব্র তাপদাহে যথাযথ রক্ষাণাবেক্ষণের অভাবে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের কার্যকারিতা হরিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান মামুন জানান, সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ করা না হলে তার গুণগত মান নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে কিছু সংবেদনশীল ওষুধ রয়েছে, যেগুলো তাপমাত্রা বাড়লেই নষ্ট হয়ে যায়। এ বিষয়ে সতর্ক না হলে স্বাস্থ্যসেবাও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই বিক্রেতা-ক্রেতা সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। ফার্মেসিগুলোতে ওষুধের কার্যকারিতা যাতে ঠিক থাকে সে ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

পূর্বধলা হাসাপাতালে ওষুধ সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে সদ্য যোগদান করেছি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খবিরুল আহসান বলেন, তীব্র দাবদাহে ওষুধের মান ঠিক রাখতে ফার্মেসি মালিকদের সচেতন করা হবে। না মানলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com