অনলাইন নিউজ : রাজধানীর বেশকিছু এলাকায় ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি থাকার কথা জানিয়েছে র্যাব। এসব এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা অটোরিকশার যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুট করে নেয় ছিনতাইকারীরা। রবিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
র্যাব জানায়, খিলগাঁও মালিবাগ রেলগেট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, হাতিরঝিলের নাসিরের টেক, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, পল্টন মোড়ের ইউবিএল ক্রসিং, গোলাপশাহ মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গনি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি দেখা যায়।
২০ আগস্ট রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুর, মতিঝিল, মুগদা এবং তেজগাঁও থানাধীন এলাকায় একযোগে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ অজ্ঞানপার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের ৩৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইলফোন, ৩টি সুইচ গিয়ার, ৩টি অ্যান্টিকাটার, ১২টি ব্লেড, ১টি কাঁচি, ৬টি চাকু, ৩টি খুর, ৭টি বিষাক্ত মলমের কৌটা, ২টি বিষাক্ত স্প্রে এবং নগদ ৮ হাজার ১১০ টাকা উদ্ধার করা হয়।গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মিজানুর রহমান (২১), সোহেল (২০), মাসুদ রানা (২১), সাব্বির (২২), আবু বকর সিদ্দিক (২২), শাকিল (২০), নাঈম মোল্লা (২০), সালমান (২৬), জালাল হোসেন (২১), শাওন (২২), শহিদুল ইসলাম (৪০), রফিক(৩৩), আজিজুর (৩৬), সৈকত মন্ডল (১৯), আরিফ গাজী (২৬), জনি (১৮), রুবেল (২৮), আফজল (১৮), দ্বীন ইসলাম (২৩), তুহিন (১৮), রবিউল আউয়াল হৃদয় (২২), আরমান (২২), সানোয়ার হোসেন (৩১), রুবেল (৩৪), সোহেল (৩৫), শান্ত (২৫), আজাদ (৩৫), আকাশ (২২), নাইম খান (১৬), আপন মিয়া (২০), নাজমুল হোসেন (২৮), মাসুম মিয়া (২৮), শান্ত (২০), সোহেল মাতব্বর (২৩), হৃদয় (১৯), সোহরাব (১৯) ও ইয়াছিন ব্যাপারী (২২)।
গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা ঘোরাফেরা করতে থাকে। তারপর সহজ সরল যাত্রীদের টার্গেট করে কখনো তাদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আবার কখনো চেতনানাশক ওষুধ মেশানো খাবার খাইয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেয়।
এছাড়া ভিড়ের মধ্যে যাত্রীদের চোখে-মুখে বিষাক্ত মলম বা মরিচের গুঁড়া বা বিষাক্ত স্প্রে করে লুট করে ছিনতাইকারীরা। ভুক্তভোগীরা খুব কম সময়ই এসব ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করতে পারেন। তারা প্রায় নির্বিঘ্নে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে ওৎ পেতে থাকে। সুযোগ বুঝে পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব লুটে নেয়। সন্ধ্যা হতে ভোর পর্যন্ত তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তা, লঞ্চঘাট, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রাজধানীতে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের ধরতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।