বিডি ঢাকা স্টাফ রিপোর্টার: মহিলা ও শিশু বিষয়ক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, নারীরা কখন বিয়ে করবে, কাকে বিয়ে করবে, কখন গর্ভধারণ করবে এগুলো সম্পূর্ণ ওই নারী সিদ্ধান্ত নিবে এবং এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার তার অধিকার আসে। নারীর অধিকার মানবাধীকার। কিন্তু বর্তমানে দেশের অনেক অঞ্চলে নারীরা এসব অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশে অর্ধেক নারী। নারীকে বাদ দিয়ে দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়।
শনিবার (২০ আগস্ট) ঢাকার একটি হোটেলে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা’র কাছে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ১০ লক্ষ মানুষের গণস্বাক্ষর হস্তান্তর কালে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএআইডির ডেপুটি পরিচালক মিরান্ডা বেকম্যান; ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন স্টিভেনস; সেলিমা আহমাদ, এমপি; মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউএসএআইডির উজ্জীবন প্রকল্পের প্রধান ড. ফয়সাল মাহমুদ। ইউএসএআইডির উজ্জীবন প্রকল্পের সহকারী প্রধান ড. জিনাত সুলতানা বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক সমস্যা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমাতায়নে বিশ্বে রোল মডেল সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘের ৭৫তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাপী ২০৪১ সাল নাগাদ কর্মস্থলে নারীর কর্মসংস্থান ফিফটি-ফিফটি উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও ঘোষণা দেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ে হার শুন্যতে নিয়ে আসবেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারীরা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। জাতির পিতা সর্বপ্রথম নারীদের গুরুত্ব অনুধাবন করেন। নেসা ইন্দিরা বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে নারী সমঅধিকার নিশ্চিত করেন। এরই ধারবাহিকতায় জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারী উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন, নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ মুহিবুজ্জামান ডিজিটাল লাইব্রেরি সম্পর্কে তার মতামত ও অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেন।
ইউএসএআইডি উজ্জীবন এসবিসিসি প্রকল্প মা, নবজাতক ও শিশু-কিশোর স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, পুষ্টি এবং যক্ষ্মা বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজের একটি সমন্বিত প্রয়াস।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উজ্জীবন প্রকল্প বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার নিমিত্ত স্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করছে। এলক্ষে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে দেশব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধিতে উজ্জীবন প্রকল্পের আওতায় ১০ লক্ষ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। এ কার্যক্রমে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভিন্ন ভিন্ন পেশা ও বয়সের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেছেন।
এ কার্যক্রম জন্স হপকিন্স সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস, ইউএসএআইডি-র উজ্জীবন প্রকল্পের আওতায় মা, নবজাতক ও শিশু-কিশোর স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি ক্ষেত্রে সাফল্য আনয়নের লক্ষ্যে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধেও বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ সংক্রান্ত একটি ডিজিটাল লাইব্রেরি তৈরি করা হয়েছে যা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত ডিজিটাল লাইব্রেরিতে, মন্ত্রণালয়ের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং অধীনন্থ দপ্তর/ সংস্থা কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের তথ্য ও উপকরণ সন্নিবেশ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর স্টিভেনস বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী, মা-বাবা, ধর্মীয় নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং নীতি নির্ধারকদের দ্বারা স্বাক্ষরিত ১০ লক্ষ অঙ্গীকারের তাৎপর্য তুলে ধরেন।