বিডি ঢাকা ডেস্ক
রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল বলেছেন, নারী উদ্যোক্তাদের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে পুঁজির অভাব। তাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। আমাদের যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের প্রচণ্ড অনীহা রয়েছে নারীদের ঋণ দিতে।
রবিবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাশহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে তিন দিনের নারী উদ্যোক্তা মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন- বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি ব্যাংককে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়, কোন খাতে কত শতাংশ ঋণ বিতরণ করতে হবে। কিন্তু তারা তা করে না। নারীদের বেলায় তাদের প্রচণ্ড অনীহা। অথচ এনজিওগুলো বিশেষ করে গ্রামীণ ব্যাংক প্রমাণ করেছে, নারীদের যে ঋণ দেয়া হয় সেই ঋণ শোধ হয়। অন্যদিকে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী বড় বড় করপোরেটদের ঋণ দিতে। যারা বিদেশে টাকা পাচার করে দেয়। আমার আপনার টাকা নিয়ে তারা ব্যবসার নামে ফূর্তি করে, তারা টাকা ফেরত দেয় না, তারা হয় ঋণ খেলাপি। তাদেরকে ধরাও যায় না। কারণ তাদের সঙ্গে অনেকেই জড়িত থাকে। ধরতে গেলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তখন তাকে আরো ঋণ দেয়া হয়।
ব্যাংকগুলোর উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বলেন- আপনারা ৫০ হাজার টাকা আমাদের নারী উদ্যোক্তাদের দিয়ে দেখেন, তারা টাকা ফেরত দেয় কিনা দেখেন। তাদের টাকা দিলে সেই টাকা মার যাবে না। তিনি বলেন, নারীদের এখনো অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে।
প্রধান অতিথি বলেন- তিন দিনের এই মেলায় একদিন সেমিনার থাকলে ভালো হতো, সেই সেমিনারে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে ব্যাংকের একটি সমন্বয় ঘটানো যেত।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার চতুর্থ শিল্প বিল্পবের সঙ্গে নিজের খাপ খাওয়ানোর জন্য নারীসহ সকলকে তৈরি হওয়ার আহ্বান জানান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাকিব হাসান তরফদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- পুলিশ সুপার রেজাউল করিম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বিপ্লব কুমার মজুমদার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খানশুর।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জাতীয় মহিলা সংস্থার ‘তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্প’ এই মেলার আয়োজন করেছে।
মেলায় প্রায় ৬৬টি স্টলে নারী উদ্যোক্তারা তাদের নানান ধরনের পণ্যসামগ্রী বিক্রি শুরু করেছেন।
তিন দিনের মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের নানান ধরনের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন গার্মেন্টস পোশাক, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথাসহ নানান বৈচিত্র্যের হস্তশিল্প, প্রসাধনী, নানান ধরনের খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।