বিডি ঢাকা ডেস্ক
আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটি। সোমবার সকালে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানবন্ধনে বক্তব্য দেন- ক্যাব চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি তাজেমুল হক ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রহিম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেনÑ সাহিদা খাতুন, আসাদুজ্জামানসহ আরো অনেকে।
পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) বরাবর স্মাকলিপি প্রদান করেন ক্যাব নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, “সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষত আলু, পেঁয়াজ এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস অবস্থা। বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু মানভেদে এখনো ৭৫-৮০ টাকা, দেশী পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১১৫-১৩০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৫-১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নভেম্বর মাসে এমন চড়া দামে আলু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। মূলত সিন্ডিকেটের কারণেই এবার আলুর দামের এমন অবস্থা। বিপুল পরিমাণ আলু হিমাগারে মজুত থাকায় ও আমদানি জটিলতার কারণে এবার আলুর দাম ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। অবশ্য দাম নিয়ন্ত্রণে বা আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নেই যথাযথ তদারকি। আলুর মতো নিয়ন্ত্রণে আসেনি পেঁয়াজের দাম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মজুতকারিরা কোনো কারণ ছাড়াই আলুর দাম বৃদ্ধি করেছেন। চলতি বছর আলু উত্তোলন মৌসুমের শুরুতে কৃষকের হাত থেকে পাইকারি দামে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২৫-২৮ টাকা। আর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৩০-৩৫ টাকা। সেই আলুর দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি কেজি ৮০ টাকায় পৌঁছেছে। কৃষক পর্যায় থেকে নামমাত্র মূল্যে আলু কিনে মজুত করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন থেকে এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারি সংস্থাগুলোকে আরো বেশি সজাগ ও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।”
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, “জেলার হিমাগারগুলোয় ও হাতেগোনা বড় ব্যবসায়ীদের হাতেই এখনো আলু মজুত রয়েছে। আর এই সিন্ডিকেটই আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও চড়া দামেই ভোক্তাদের আলু কিনতে হচ্ছে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম এখনো বেশি। এ কারণে খুচরা বাজারেও পণ্যটির দাম কমেনি। হিমাগার পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর তদারকি না থাকায় আলুর দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। এতে পণ্যটির দাম কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমেছে। এছাড়া শীতের সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও পড়তির দিকে।”
স্মারকলিপিতে তারা আরো বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি লোভ ও মোহহীন কল্যাণকামী সরকার। স্বৈরাচারী সরকারের দোসররা এই সরকারকে ব্যর্থ করার গভীর ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। তাই তারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারসাজিতে ব্যস্ত। ভোক্তা স্বার্থে ক্যাব এর তীব্র প্রতিবাদে ৮ দফা দাবি উপস্থাপন করছে।”
মানববন্ধনে ক্যাব সদস্যরা ছাড়াও শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।