বিডি ঢাকা ডেস্ক
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় ধানখেতে কীটনাশকের ব্যবহারের পরিবর্তে আলোক ফাঁদ পেতে ক্ষতিকর পোকা দমনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বুধবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার নাকইল ব্লকে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। আমন ধানের সুরক্ষায় আলোক ফাঁদ ব্যবহারে কৃষকদের দৃষ্টি পড়েছে এ প্রযুক্তির ওপর। নিয়ামতপুর কৃষি অফিসের সহায়তায় কৃষকেরা আলোক ফাঁদ স্থাপন করেছেন। এতে পোকা দমনসহ ধানখেতে ক্ষতিকর কী ধরনের পোকা রয়েছে, তা শনাক্ত করা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তা দমন করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই পদ্ধতি কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার প্রতিটি ব্লকে এই আলোক ফাঁদ বসানোর মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকা শনাক্তকরণ করা হবে।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাসির জানান,আলোক ফাঁদ তৈরি করতে সন্ধ্যার পর ধান ক্ষেত থেকে পঞ্চাশ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের অথবা কাঠের তিনটি খুঁটি ত্রিকোণাকার করে মাটিতে পুঁতে মাথার অংশ একত্রে বেঁধে দিতে হবে। এরপর মাটি থেকে আড়াই থেকে তিন ফুট ওপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে খুঁটির মাথার রশির সাহায্যে ঝুলিয়ে দিতে হবে। নিচে একটি বড় আকারের প্লাস্টিকের গামলা বা পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার মিশ্রিত পানি রাখাতে হবে। মাঠজুড়ে যখন অন্ধকার নেমে আসতে থাকে তখন ফাঁদের আলোর ঝলকে আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় পাত্রের পানিতে পড়ে মারা যায়। আমইল গ্রামের কৃষক জমশেদ আলী জানান, আলোক ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতে দৃষ্টি নন্দনও বটে। এতে খরচ কম হয় এবং পরিবেশ বান্ধব। তাই ধান ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি শনাক্তকরণ ও দমনে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি আমাদের এলাকায় সাড়া জাগিয়েছে। এতে সহযোগিতা করছেন দায়িত্বরত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ। আলোক ফাঁদে ক্ষতিকর পোকার মধ্যে মাজরা পোকা, সবুজ পাতা ফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা ও বাদামি গাছ ফড়িং (কারেন্ট পোকা), সাদা পিঠ গাছ ফড়িং ও গান্ধি পোকার উপস্থিতি বেশি দেখা যায় বলে জানান এলাকার একাধিক কৃষক।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ক্ষতিকর পোকামাকড় বিশেষ করে বিপিএইচ বা কারেন্ট পোকা যাতে রোপা আমন ধানের ক্ষতি করতে না পারে এবং কৃষকরা সঠিক সময়ে যেন পোকা দমনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে সেজন্যই একযোগে আলোক ফাঁদ স্থাপনের এ কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই কর্মকর্তা আরো বলেন, এই আলোক ফাঁদ গ্রামের কৃষকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।