পাকিস্তানের সাপ্তাহিক মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো বিগত পাঁচ মাসের মধ্যে ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কোনো কোনো পণ্যের দাম এক সপ্তাহে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যেমন- পেঁয়াজ, মুরগির মাংস, ডিম, চাল, সিগারেট এবং জ¦ালানির দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়াতে বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন এ তথ্য জানিয়েছে। গত শুক্রবার পাকিস্তান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস (পিবিএস) রিপোর্টে দেখা গেছে, পাঁচ মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো সাপ্তাহিক মূল্যস্ফীতি ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। যা আগের সপ্তাহের চাইতে ৩৮.৪২ শতাংশ এবং রেকর্ড পরিমান বেশি। পরিসংখানে দেখা যায়, ৫১টি পণ্যের মধ্যে ৩৩টি পণ্যের দাম বেড়েছে, ৬টি পণ্যের দাম কমেছে এবং ১২টি পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
গত সপ্তাহে, যে পণ্যগুলির দাম এক বছর আগের তুলনায় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সেগুলি হল পেঁয়াজ ৩৭২ শতাংশ, সিগারেট ১৬৪.৭ শতাংশ, গ্যাস ১০৮.৩৮ শতাংশ, মুরগি ৮৫.৭ শতাংশ, ডিজেল ৮১.৩৬ শতাংশ, ডিম ৭৫.৮১ শতাংশ, ইরি ৬/৯ চাল ৭৫.৪১ শতাংশ, ভাঙা বাসমতি চাল ৭৪.১৬ শতাংশ, কলা ৭২.২২ শতাংশ, মুগ ডাল ৭০.৩৯ শতাংশ এবং পেট্রোল ৬৯.৮৭ শতাংশ। বিপরীতে, টমেটোর দাম -৬৭.৯ শতাংশ, মরিচের গুঁড়া -৭.৪২ শতাংশে নেমে এসেছে। এ ছাড়া বিদ্যুতের দাম -৬.৬৪ শতাংশ কমে এসেছে। তবে সবমিলিয়ে পরিসংখান বলছে দ্রব্যমূল্যের দাম গত বছরের তুলনায় রেকর্ড পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাকিস্তান সরকার আইএমএফ এর শর্ত রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে যা দেশটির অর্থনীতিকে আরও বিপর্যস্ত করতে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে সরকার ইতোমধ্যে বাজার ভিত্তিক বিনিময় হার গ্রহণ সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে জ¦ালানি এবং বিদ্যুতের শুল্ক বৃদ্ধি, ভর্তুকি প্রত্যাহার, এবং রাজস্ব ঘাটতি পূরণের জন্য আরো কর আরোপ করা ইত্যাদি। এদিকে চীন চলতি সপ্তাহে পাকিস্তানের জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার পুনঃঅর্থায়ন ঘোষণা করেছে, যা স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তান পেয়েছে। দেশটি বর্তমানে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং এর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছে। ফলে অর্থের ঘাটতি পুরণের জন্য দেশটির দ্রব্যমূল্যের উপর প্রভাব পড়ছে।