শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন

পেশায় ছিলেন গাড়িচালক, রাজউকের কোটিপতি তিনি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২১
  • ২২৭ বার পঠিত
পেশায় ছিলেন গাড়িচালক, রাজউকের কোটিপতি তিনি
গাড়িচালক আব্দুল জলিল- ফটো সংগৃহীত

অনলাইন নিউজ : পেশায় ছিলেন গাড়িচালক। চাকরি করতেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউকে। বছরখানেক আগে অবসরে গেছেন। তবে চাকরির সময়ই নানা দুর্নীতি করে গুছিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকার সম্পদ। শুধু নিজের নামে নয়, স্ত্রীর নামেও আছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। একাধিক গাড়ির মালিক দুজনই। গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নকলায় করেছেন মৎস্য খামার। ঢাকার বাড্ডা ও পূর্বাচলে তিন মেয়ের নামে রয়েছে দুটি প্লট। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। স্ত্রী জাহানারা বেগমসহ আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।

দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের গাড়িচালক আব্দুল জলিল আকন্দের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৭ সালে তদন্ত শুরু করে  দুদক। ওই বছরেরই ২০ আগস্ট জলিল ও তার স্ত্রী জাহানারাকে নিজেদের নামে ও সন্তান-স্বজনদেরও সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে দুদক থেকে চিঠি পাঠানো হয়। ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর জলিল ও তার স্ত্রী দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

জলিল তার সম্পদ বিবরণীতে নিজ নামে প্রায় ৩৪ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ ও প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখান।

দুদক সূত্র জানায়, সম্পদ বিবরণীতে আব্দুল জলিল আকন্দের স্ত্রী জাহানারা বেগম নিজের ও কন্যাদের নামে ৫২ লাখ টাকার স্থাবর ও নিজের নামে প্রায় ২ কোটি ২৬ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দেন। পরে দুদকের অনুসন্ধানকারী দল জাহানারা বেগমের সম্পদ বিবরণী যাচাই করতে গিয়ে পূবালী ব্যাংকের কুড়িল বিশ্বরোড শাখায় ৩০ হাজার টাকা, ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৩৩৩৫ নম্বরের গাড়ি (ক্রয়মূল্য প্রায় ৯ লাখ টাকা), ঢাকা মেট্রো-ট-১৫-৪৯১৭ নম্বরের একটি গাড়ি (ক্রয়মূল্য সাড়ে ৪ লাখ টাকা), ঢাকা মেট্রো-ক-০২-৩৩০৯ নম্বর সিরিয়ালের একটি গাড়ি (ক্রয়মূল্য দেড় লাখ টাকা), মাটি কাটার ভেক্যু মেশিন (ক্রয়মূল্য ১২ লাখ টাকা)-সহ মোট সাড়ে ২৭ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ গোপন করার তথ্য পায়।

দুদক সূত্র জানায়, রাজউকের গাড়িচালক আব্দুল জলিল আকন্দের স্ত্রী জাহানারা বেগম পেশায় গৃহিণী। তিনি মূলত স্বামীর অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ নানা ব্যবসায় বিনিয়োগ করে এবং নিজের নামে সম্পদ গড়ে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

অনুসন্ধানে জাহানারা বেগমের নামে অর্জনকৃত মোট প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। এরমধ্যে ২ কোটি টাকার গ্রহণযোগ্য আয়ের তথ্য পাওয়া গেলেও প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।

দুদক সূত্র জানায়, আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রী জাহানারা দুজনেই সম্পদের তথ্য গোপন ও আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের পর তা স্থানান্তর বা হস্তান্তর করে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬(২), ২৭(১) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুদকের উপ-পরিচালক হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) তাদের দুজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।

দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, গাড়িচালক আব্দুল জলিলের আরও সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। এরমধ্যে রাজধানীর বাড্ডা ও পূর্বাচলে দুটি প্লট রয়েছে। প্লটগুলো তিনি তিন মেয়ের নামে হেবা দলিল করে দিয়েছেন। বাড্ডার প্লটে বাড়ি করার জন্য রাজউক থেকে পরিকল্পনা পাসও করিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com