বিডি ঢাকা ডেস্ক
রমজান ও ইদুল ফিতরের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা। সম্পদশালী মুসলমানদের পাশাপাশি দরিদ্র মুসলামানরাও যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারে, সে জন্য আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়াতাআলা ফিতরা আদায় আবশ্যক করেছেন।
ইদের দিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করা সর্বোত্তম। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদের নামাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে ফিতরা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি: ১৫০৯)
সাহাবায়ে কেরাম ইদের আগে ফিতরা আদায় করেছেন এ রকম দৃষ্টান্তও পাওয়া যায়। নাফে (রহ.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) ইদের এক দুদিন আগেই ফিতরা আদায় করে দিতেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৬০৬)
ইসলামি আইনবিশারদগণের নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী ইদের আগে রমজানের শুরু থেকে বা রমজানের আগেও ফিতরা আদায় করা জায়েজ। তাই রমজানের আগেও কেউ যদি ফিতরার নিয়তে কিছু দান করলে তা ফিতরা গণ্য হবে। তবে ফিতরা ইদের দিন বা রমজানের শেষ দিকে আদায় করাই উত্তম।
কাদের ওপর ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব?
ইদুল ফিতরের দিন সকালে যে ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ ও ব্যবসাপণ্য) মালিক থাকে, তার ওপর ওয়াজিব হয় তার নিজের পক্ষ থেকে এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্বাধীন-দাস ছোট-বড় নারী-পুরুষ সব মুসলমানের জন্য গম বা খেজুরের এক সা (৩ কেজি ২৭০ গ্রাম) ফিতরা আদায় করা আবশ্যক করে দিয়েছেন। ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার আগেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি: ১৫০৩)
ইদুল ফিতরের দিন সূর্যোদয়ের সময় ফিতরা ওয়াজিব হয়। তাই ইদের দিন সূর্যোদয়ের আগে কোনো শিশুর জন্ম হলে তার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব হবে, ইদের দিন সূর্যোদয়ের পর কোনো শিশুর জন্ম হলে তার পক্ষ থেকে ফিতরা দিতে হবে না।
স্ত্রী ও প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েরা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হলে তাদের ওপর ফিতরা ওয়াজিব হয় না, তাদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব নয়।
এবারের ফিতরা কত?
হাদিসে নবিজি (সা.) উন্নত মানের খেজুর, মধ্যম মানের খেজুর, কিসমিস, পনির ও গম -এই পাঁচটি খাদ্যদ্রব্যের যে কোনো একটির মাধ্যমে ফিতরা আদায় করার অনুমতি দিয়েছেন। এগুলোর মূল্য অনুযায়ী ফিতরা সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্ধারিত হয়। এ বছর (রমজান ১৪৪৬ হিজরি মোতাবেক ২০২৫ খৃষ্টাব্দ) বাংলাদেশ সরকারের ফিতরা নির্ধারণ কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ফিতরার পরিমাণ জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।