বিডি ঢাকা ডেস্ক
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলোনীয়া এলাকায় নদী থেকে উত্তোলনকৃত বালু লুটের মহোৎসব চলছেই। একইভাবে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের কাউতলী নদীর বেড়িবাঁধে উত্তোলনকৃত বালুও প্রভাবশালীরা লুট করছে বলে জানান স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিলোনীয়ার বাউরখুমা অংশের ইজারা নেওয়া হলেও কাউতলীতে ইজারা ছাড়াই কোটি কোটি টাকা বালু উত্তোলন করা হয়েছে। উভয় এলাকায় বালু উত্তোলনের করণে এলাকার ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আশপাশের বাড়িঘরও হুমকির মুখে রয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী ইজারাদাররা পালিয়ে যাওয়ায় যে যার মতো করে উত্তোলনকৃত এসব বালুগুলো লুটে নিয়ে যাচ্ছে। তবে ভয়ে কেউ লুটেরাদের বিষয়ে মুখ খুলছেন না। এতে করে বিশাল স্তুপের বালুমহালটি এখন সমতল মাঠে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উত্তোলনকৃত বালু নিতে আসা শ্রমিকরা জানান, লিটন নামে এক ব্যক্তি রাস্তা সংস্কারের জন্য বালু নিতে এখানে গাড়ি ও তাদের পাঠিয়েছেন।
কোন লিটন জানতে চাইলে তারা বলেন, যিনি তাদের পাঠিয়েছেন তার নাম লিটন, এটাই তারা জানেন। তবে তারা তাকে সরাসরি চিনেন না। একইভাবে কাউতলীতে জেলা জিয়া মঞ্চের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন নামের এক ব্যক্তি বালুমহাল দখলে নেন। কোনো ইজারা ছাড়াই সেখানকার বালুগুলো উত্তোলন করা হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও একাধিক ব্যক্তি জানান, পরশুরাম উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল খায়ের লিটন বালু নিতে গাড়ি পাঠিয়েছেন।
বালু নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল খায়ের লিটন জানান, ব্যক্তিগতভাবে তিনি কোন রাস্তাঘাটের কাজ করেন না। যারা বালু উত্তোলন করেছে তারা এলাকায় রয়েছে। তিনি এসব বালু লুটের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
নুর হোসেন জানান, নতুন করে বালু উত্তোলন হচ্ছে না। উত্তোলনকৃত বালু বন্যার সময় বেশিরভাগ পানির সাথে চলে গেছে। যেগুলো রয়েছে, সেগুলো যারা আগে জড়িত ছিল তারাই স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন নিয়ে বিক্রি করছেন। এতে অনেকেরই যোগসাজশে রয়েছে। তবে তিনি এর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নন।
পরশুরাম থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল হাকিম জানান, নদীর বালু কারা ইজারা নিয়েছে সেটি তার জানা নেই। বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও উত্তোলনকৃত বালু ইজারাদারের দায়িত্বে রয়েছে। তারা বিক্রি করছে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে সংরক্ষিত বালু কে বা কারা নিয়ে যাচ্ছে, সেটি তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে থানার ওসিকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেয়া হবে।