বিডি ঢাকা ডেস্ক
জামালপুর পৌরসভার বিদ্যুতের চার কোটি ২৬ লাখ টাকা ও জেলা পুলিশের ৯০ লাখ টাকা বিল বকেয়াসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আদায়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় দিনদিন বাড়ছে বকেয়া বিল। বারবার চিঠি দেওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানগুলো বকেয়া বিল পরিশোধ করছে না বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) জামালপুর কর্তৃপক্ষ।
বিউবো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর পৌরসভার চার কোটি ২৬ লাখ টাকা, জেলা পুলিশের ৯০ লাখ, জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনের ৩৬ লাখ টাকা, শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী ১২ লাখ টাকা ও জামালপুর স্টেডিয়ামের সাড়ে ২২ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে।
জামালপুর পৌরসভা ৫৯টি বৈদ্যুতিক মিটার ও জেলা পুলিশ ১৪টি বৈদ্যুতিক মিটার ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়া জামালপুর রেলওয়ে স্টেশন, শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী ও জামালপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম স্টেডিয়ামে একটি করে মিটার রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পরে থাকলেও বিল পরিশোধের কোন উদ্যোগ নেই। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য বারবার দপ্তরকে চিঠি দিয়েও এর কোন সমাধান পাওয়া যায়নি বিউবো।
জামালপুর পৌরসভার বকেয়া বিল শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকে। তারপর থেকেই বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ায় বিল বড় আকারে বকেয়া হয়। বর্তমানে পৌরসভা প্রতি মাসে বিল পরিশোধ করলেও বকেয়া বিল থেকে ৫০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করে যাচ্ছেন। যে হারে বকেয়া বিল পরিশোধ করছেন তাতে বিল পরিশোধে সময় লাগে ৫০ বছরেরও বেশি সময়। এদিকে জামালপুর জেলা পুলিশের দীর্ঘ কয়েক বছরের বিভিন্ন সময় কিছু করে বিল বকেয়া রাখেন। বকেয়া জমা করতে করতে ৯০ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে।
জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনেরও দীর্ঘ কয়েক বছরের বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ বিল কিছু করে বকেয়া রাখা হয়। সেভাবেই বকেয়া জমতে জমতে ৩৬ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। শেখ হাসিনার সাংস্কৃতিক পল্লীতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কোন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি।
এছাড়াও জামালপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল হাকিম স্টেডিয়াম কর্তপক্ষও দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছে না। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মহিবুল আজাদ রুবেল জনকণ্ঠকে বলেন, জামালপুর পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে চার কোটি ২৬ লাখ টাকা।
তবে বিল বকেয়া থাকলেও চলতি বিল নিয়মিত পরিশোধ করছে। পেছনের বকেয়া থেকে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করে যাচ্ছেন। আমরা কিছু দিন আগে পৌরসভার প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তিনি প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে বকেয়া পরিশোধ করবেন বলে জানিয়েছলেন। এখন আবার সেই প্রশাসক পরিবর্তন হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে বারবার নোটিশ দেওয়া হচ্ছে তবুও কোন কার্যকর ব্যবস্থা হচ্ছে না।
জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনের বকেয়া বিল নিয়ে জানতে রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মাসুদ আনোয়ার বলেন, প্রতি মাসের রানিং বিল নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে। বকেয়া বিল পরিশোধ করার চেষ্টা চলছে। জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক মৌসুমী খানম জনকণ্ঠকে বলেন, পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি।
আমরা জনসেবামূলক কাজগুলো আগে করছি। পৌরসভার অনেকগুলো মিটার রয়েছে। পৌরসভার যে যে মিটারে বকেয়া রয়েছে, সেই মিটারগুলোর বকেয়া বিল একে একে পরিশোধ করা হবে।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম জনকণ্ঠকে বলেন, শেখ হাসিনা সাংস্কৃতিক পল্লী ও স্টেডিয়ামের বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।