বিডি ঢাকা ডেস্ক
বগুড়ার রবিবার রাতে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে এক নারী একই সঙ্গে ৪টি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। নবজাতক ৪ জনই সুস্থ্য রয়েছে। এক সঙ্গে ৪টি সন্তান হওয়ায় তাদের বাবা ও মা উভয়ই খুশি। তবে খুশি হলেও পরিবারের ব্যয়ভার নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ৪ কন্যা সন্তানের জনক রতন মোদক। তিনি হোটেল শ্রমিক।
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গির পাড়িয়া গ্রামের রতন মোদক পঞ্চগড়ের অটোয়া থানার অনন্যাকে বিয়ে করেছিলেন ৫ বছর আগে। তবে তাদের ইচ্ছা থাকলের সন্তানের বাবা মা হতে পারছিলেন না। এনিয়ে চিকিৎসাও করেন অনেক। অবশেষে এই দম্পতির নিকট দীর্ঘদিনের আকাঙ্খা পুরন হওয়ার সুযোগ আসে। তবে এক্ষত্রে বাধা হয়ে ওঠে তাদের আর্থিক অস্বচ্ছলতা। ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুর ও পরে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে চলে আসেন বগুড়ায়। রতনের এক আত্মীয় থাকেন বগুড়ার শাজাহানপুরের গন্ডগ্রাম এলাকায়। সেখান থেকেই স্ত্রীর চিকিৎসা চালিয়ে আসছেন বগুড়ার গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাঃ চিত্রলেখা কুন্ড’র কাছে। আর ডাঃ চিত্রলেখার নিকটও এটি ছিলো একটি চ্যালেঞ্জ।
প্রায় ৭/৮ মাস ধরে বগুড়ার শাজাহানপুরের গন্ডগ্রামে অত্মীয়র বাড়িতে থেকে অনন্যা-রতন দম্পতি চিকিৎসা চালিয়ে যান। এই সময় বগুড়াতে মাঝে মাঝে বিভিন্ন হোটেল কাজ করেন রতন। এভাবেই স্ত্রীর চিকিৎসা চলছিলো বলে জানান তিনি। ঠাকুরগাঁওয়ে তিনি হোটেলসহ বিভিন্ন দিনমজুরের কাজ করতেন। তবে এত প্রতিকূল পরিস্থিতিও এই দম্পতিকে হতাশ করতে পারেনি। সন্তানের মুখ দেখতে তারা ছিলেন ব্যাকুল। চিকিৎসকের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন ৪টি সন্তান তাদের ঘরে আসতে চলছে। সেই কথায় তাদের দীর্ঘ দিন স্বপ্ন আরও রঙীন হয়ে উঠতে থাকে শত প্রতিকুলতার মাঝেও। তাদের সহায়তা দিয়ে সাহস বাড়িয়ে দেন চিকিৎসক চিত্রলেখা।
অবশেষে রবিবার রাতে প্রসূতি অনন্যা ভর্তি হন বগুড়ার ঠনঠনিয়া এলাকায় ডক্টর ক্লিনিকে। সেখানে রাতেই অপারেশন করেন ডাঃ চিত্রলেখা কুন্ড। সুস্থ্যভাবেই ৪টি কন্যা শিশু ভূমিষ্ঠ হয়। সোমবার সন্ধ্যায় ডাঃ চিত্র লেখা জানান এটি তার জন্য ছিলো অনেকটা চ্যালেঞ্জের মতো। এর আগে তার হাত দিয়ে ৩টি শিশু একসঙ্গে ভূমিষ্ট হলেও ৪টি শিশুর জন্ম তারকাছে অন্যরকম অনভুতি। তিনি জানালেন কিছুটা প্রিম্যাচিউর হওয়ায় তিনি শিশুদের নিয়ে চিন্তায় থাকলেও এখন তারা সুস্থ্য আছেন বলে জানিয়ে বলেন নবজাতকরা শিশু বিশেষজ্ঞ অঞ্জনা বসাকের তত্ববধানে রয়েছেন। তিনি জানান পরিবারটি অবস্থা ভেবে অপারেশন ব্যয় গ্রহন করা হবে না। এছাড়া ক্লিনিকের চিকিৎসা ব্যয়ও যেন কম হয় সেটি তারা দেখবেন। তবে এর পরেও ৪টি শিশুর জন্য পরিবারটিকে আরো সংগ্রাম করতে হবে।
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষও জানালেন ৪ সন্তানের একসঙ্গে জন্মের বিষয়টি তাদেরও রমাঞ্চিত করেছে। আর ৪ শিশুর পিতা রতন মোদক জানালেন তিনি ও তার স্ত্রী অনন্যা খুব খুশি। তবে তার চিন্তা শিশুদের চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ জোগানো নিয়ে। জানালেন তার ৪ ভাই বোনসহ মাকে নিয়ে তাদের পরিবার। পরিবার প্রধান উপার্জনক্ষম তিনিই। এখন তার পরিবারের সদস্য দাড়ালো ১১’তে।