শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

বাগেরহাট সদর হাসপাতালে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ

বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২
  • ৯০ বার পঠিত

বিডি ঢাকা অনলাইন ডেস্ক

 

বাগেরহাট সদর হাসপাতালে একাধিক কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকালাপের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেননা বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সরকারী হাসপাতালে এ ধরনের অনৈতিক কাজের কারনে চিকিৎসা সেবার মান নষ্টের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবার স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, এই ঘৃনিত কর্মকান্ডের সাথে যারা জড়িত সঠিক তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট সদর হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ( সাবেক কুক মশালচি বর্তমানে অবৈধভাবে পদোন্নতি প্রাপ্ত এমএলএসএস) মোঃ হালিম (৩৮), হাসপাতালের ওটি বয় মোঃ ফরিদ হোসেন (৩০), (এমএলএসএস) মোঃ সুমন (৩৫) এবং ওটি বয় ওবায়দুল হোসেন(৩০) এর বিরুদ্ধে হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষে বাইরে থেকে টাকার বিনিময়ে সুন্দরী নারীদের এনে অসামাজিক কার্যকালাপ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের এ ধরনের অনৈতিক কার্যকালাপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসলেও তাদের ভুমিকায় সঠিক কোন কাজে আসছে না বলে জানা যায়।

অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এক নারী জানান, মায়ের চিকিৎসা করানোর মধ্যে দিয়ে হাসপাতালের মোঃ হালিমের সাথে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে একটা ভাল সম্পর্ক তৈরী হয়। আমার পারিবারিক অস্বচ্ছলতার বিষয় সে জানতে পারে। সে আমাকে একদিন প্রস্তাব দেয় তোমার হাতে কোন সুন্দরী নারী আছে, কারন জানতে চাইলে সে আমাকে টাকা দিবে বলে প্রস্তাব দেয়। প্রথমে তাকে না করলেও পরবর্তীতে আমার পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও পরিবারের কথা চিন্তা করে তার প্রস্তাবে রাজি হই। এর সূত্র ধরেই পরবর্তিতে হাসপাতালের মোঃ সুমন, মোঃ ফরিদ ও ওবায়দুলের সাথে পরিচয় হয়। তারা আমার কাছে কোন সুন্দরী মেয়ে চাইলে পৌছে দিতাম ,তারা আমাদের চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিত। তিনি জানান, হাসপাতালের দ্বি-তলায় অপারেশন থিয়েটারের পাশের রুমে, হাসপাতালের প্যাথলোজির পার্শের রুমে , জরুরি বিভাগের অপর পাশে ও হাসপাতালের রান্নঘরে এ ধরনের কার্যক্রম চলে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য এক নারী জানান, আপার মাধ্যমে হাসপাতালে হালিমের সাথে আমার পরিচয় হয়। হালিমের মাধ্যমে হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মচারীসহ একাধিক বহিরাগতদের এনে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে আমার সাথে সহবাসে মিলিত হয়। তিনি বলেন, এই হালিম আমার সাথে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কাজ করেও টাকা দেয়নি।

খোজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের যারা এ ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত তারা প্রত্যেকেই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী। তারা সুন্দরী মেয়েদের এনে হাসপাতালে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কাজ নিজেরা করে ও আবার কখনো বহিরাগতদের এনে এ ধরনের কাজ করায়। এখানে তারা বিভিন্ন মাদকদ্রব্যও সেবন করা হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। জুন মাসের প্রথম দিকে মোড়েলগঞ্জ উপজেলা সরকারী হাসপাতালের প্রধান সহকারী মোঃ রেদোয়ান হোসেনকে একাধিক মেয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এই হালিম। ইতিপূর্বে একাধিকবার বাগেরহাট হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় টাকার বিনিময় নারীদের ভোগ করে আসছে এই রেদোয়ান। সম্প্রতী গত২রা জুলাই বাগেরহাট সদর উপজেলার বাদাম তলা এলাকায় একটি বাড়িতে মোঃ রেজোয়ান হোসেন সুন্দরী এক নারীর সাথে মেলামেশা অবস্থায় স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পড়ে।

সমাজের বিভিন্ন শ্রেনীর একাধিক সচেতন মহল জানান, সরকারী হাসপাতালে এ ধরনের অনৈতিক কাজে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসা সেবার মান নষ্টের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতালের মত একটি জায়গায় এ ধরনের অপকর্ম কোন ভাবেই কাম্য নয়। সঠিক তদন্ত করে এই ঘৃনিত কর্মকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার নজরুল ইসলাম জানান, আমি অভিযুক্তদের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাকে পরিস্কার করে কিছু না বললেও তাদের কথায় অস্পষ্টতা লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি ।

এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে তত্ত¦াবধায়ক ডাঃ অসীম সমাদ্দার জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি অতিব দুঃখ জনক,ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

বাগেরহাট থেকে রুহুল আমিন বাবু

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com