বিডি ঢাকা ডেস্ক
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি বাড়ছে। এই স্থলবন্দর দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) ভারত থেকে ৭১ ট্রাকে আলু এসেছে ১ হাজার ৮১৮ টন। সর্বশেষ শনিবার ৭৪ ট্রাকে এসেছে ১ হাজার ৮৫৩ টন। এটি এই বন্দর দিয়ে এক দিনে সর্বোচ্চ আমদানি।
সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কেজিতে আলুর দাম কমেছে চার টাকা। এক দিন আগেও বন্দরে প্রকারভেদে আলু বিক্রি হয়েছে ৫৫-৫৭ টাকা, যা বর্তমানে কমে ৫১-৫৩ টাকা কেজি দরে নেমে এসেছে। দাম আরো কমতে পারে বলে জানিয়েছে বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
দেশি আলুর সরবরাহ কমে যাওয়ায় হঠাৎ করেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠে আলুর দাম। দাম সহনীয় পর্যায়ে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে দেয় সরকার। গত ৫ সেপ্টেম্বর ২৫ শতাংশ থেকে শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ ও নিয়ন্ত্রণ শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়। এরপরও আমদানি শুরু হয়নি।
সম্প্রতি দেশে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহ থেকে আমদানি শুরু হয়। প্রথম দিকে দুই-তিন ট্রাক আমদানি হলেও পরে তা বেড়ে ১০-২০ ট্রাকে দাঁড়িয়েছে। বন্দর দিয়ে ডায়মন্ড ও কার্ডিনাল এ দুই ধরনের আলু আমদানি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরে আলু কিনতে আসা আইয়ুব হোসেন বলেন, কয়েক দিন আগে যখন আলু আমদানি শুরু হলো, সে সময় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ৪৮ টাকা। কয়েক দিন এমন থাকার পর দাম বাড়তে শুরু করে। ৪৮ থেকে বেড়ে ৫০, পরে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এরপর আবার বেড়ে ৫৫- ৫৭ টাকায় উঠে যায়। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে প্রচুর আলু আমদানি হয়েছে। এতে কেজিতে চার টাকা করে কমেছে। এ কারণে কিনতে যেমন সুবিধা হচ্ছে, তেমনি মোকামগুলোতে পাঠাতে সুবিধা হচ্ছে ও পুঁজি কম লাগছে।
বন্দরের আলু আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার গত সেপ্টেম্বর মাসে আলু আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে দেয়। কিন্তু পড়তা না থাকায় সে সময় বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি সম্ভব হয়নি। বর্তমানে দেশের বাজারে দাম বাড়তি হওয়ায় ও ভালো চাহিদা থাকায় আমদানি শুরু হয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি অব্যাহত রেখেছেন আমদানিকারকরা। কিন্তু ভারতেই আলুর দাম বেশি। যার কারণে চাহিদা মোতাবেক আমদানি করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরেক আলু আমদানিকারক সাহাবুল ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে আলুর সংকট ও চাহিদা থাকায় আমদানি বেশি হচ্ছে। প্রথম দিকে বন্দর দিয়ে দুই-তিন ট্রাক করে আমদানি করা হচ্ছিল। সে সময় আমাদের পড়তা ছিল ৪৬ টাকার মতো। আর আমরা বন্দরে বিক্রি করছিলাম ৪৭-৪৮ টাকা করে। এখন দেশে আলুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় সব আমদানিকারক বেশি পরিমাণ আলু আমদানি করছে। এতে আলুর দাম কমেছে।
হিলি স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, বন্দর দিয়ে আগের তুলনায় আলু আমদানি বেড়েছে। যেহেতু এটি কাঁচাপণ্য, তাই যেদিনই ভারত থেকে দেশে আমদানি করা হয় ও বন্দরে প্রবেশ করে, সেদিনই ছাড় দেওয়া হয়। বন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার ১ হাজার ৮১৮ টন আলু আমদানি হয়েছে।