বিডি ঢাকা ডেস্ক
বিশ্বে মশলা রপ্তানিতে অন্যতম দেশ ভারত। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৪১০ কোটি ডলারের মশলা রফতানি করেছিল ভারত। কিন্তু সে বাজার এবার ভাটার মুখে। একের পর এক দেশে নিষিদ্ধ হচ্ছে ভারতীয় মশলা।
প্রাচীনকাল থেকেই পশ্চিমের দেশগুলি মশলার সূত্রেই ভারতের সঙ্গে একসময় বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। সমুদ্র পেরিয়ে মশলা কিনতে আসতেন বিদেশি বণিকেরা। ভারতের নিজস্ব মশলার ব্র্যান্ড তৈরি হয়েছে একাধিক। তাদের মোড়কেই সেরা মশলা বিদেশে রফতানি করা হয়।
কিন্তু ভারতের সেই বিখ্যাত মশলার সংস্থাগুলি সম্প্রতি বিতর্কের মুখে। এমডিএইচ, এভারেস্টের মতো ব্র্যান্ডের মশলা নিষিদ্ধ করেছে কিছু দেশ। কোনও কোনও দেশ আবার ভারতীয় মশলার গুণমান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। বিশ্বের বাজারে মশলায় মুখ পুড়েছে নয়াদিল্লির।
গত মাসেই প্রথমে সিঙ্গাপুর এবং হংকং ভারতের এমডিএইচ গোষ্ঠীর তিনটি এবং এভারেস্টের একটি মশলা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। অভিযোগ, মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক (এথিলিন অক্সাইড) রয়েছে ওই মশলায়, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
শুক্রবার ভারতের পড়শি নেপালও এই দুই ব্র্যান্ডের মশলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। বলা হয়েছে, মশলাগুলি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। চূড়ান্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত দেশে ওই দুই ব্র্যান্ডের মশলা কেনা, বিক্রি করা বা ব্যবহার করা যাবে না।
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডও ভারতীয় মশলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিটেন জানিয়েছে, এই বিশেষ দুই ব্র্যান্ডের মশলা নিয়ে তারা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে। ভারতের সমস্ত মশলার উপর নজরদারি চালাচ্ছে তারা।
ভারতের মশলায় মূল বিতর্ক এথিলিন অক্সাইড নিয়েই। অভিযোগ, এই রাসায়নিক মশলা জীবাণুমুক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষের শরীরের পক্ষে এই মশলা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই মশলা শরীরে বেশি গেলে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।
আগে মশলা পরিশোধনে অন্যান্য দেশও এথিলিন অক্সাইড ব্যবহার করত। পরে এই রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা জানা যায়। তার পর থেকে বিভিন্ন দেশ এই রাসায়নিক ব্যবহার ধাপে ধাপে তুলে দিয়েছে।
যে দুই সংস্থার মশলার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তারা ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এভারেস্ট এবং এমডিএইচের দাবি, তাদের মশলা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
একে একে বিভিন্ন দেশ ভারত থেকে মশলা কেনা বন্ধ করে দিলে, ভারতের বাণিজ্য মহলে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। দেশটির অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়ারও আশঙ্কা আছে। কারণ, মশলা থেকে প্রতি বছর বিপুল আয় হয় ভারতের।