শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

বীরগঞ্জে দেওয়ালের এক পাশে মন্দির অপর পাশে মসজিদ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৫ বার পঠিত

বিডি ঢাকা ডেস্ক

 

 

 

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ইটের দেওয়ালের এক পিঠে সনাতনী মন্দির ও অপর পিঠে মসজিদ দুই ধর্মের মতবিরোধ ছাড়াই সম্প্রীতির বিরল মিল বন্ধন হিসাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। হিন্দু ধর্মের পুরোহিত ও মসজিদের প্রধানের সমন্বয়ে চলে পূজা-আর্চনা এবং নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বীরগঞ্জের ৬ নং নিজপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে রয়েছে বিষ্ণু মন্দির। ইটের প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এই মন্দিরটির উত্তর দেওয়ালের অপর দিকে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় দামাইক্ষেত্র জামে মসজিদ। এ মসজিদে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করে। সূচনা লগ্ন থেকে মন্দিরে পূজা আর্চনা এবং মসজিদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। দীর্ঘ দিন থেকে ধর্মীয় কার্যক্রম চললেও সেখানে কখনো কোনো মতবিরোধের সৃষ্টি হয়নি। বরং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পূজা-পার্বণে মুসলিমদের সহযোগিতা স্থানীয় হিন্দুদের উজ্জীবিত করে রাখে।

বীরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল গফুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দুটি প্রতিষ্ঠান সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তার উপস্থিতিতে দুই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ তাদের অভিব্যক্তি তুলে ধরেন।

মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডাক্তার খাইরুল আলম বলেন, মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোনো দিন মুসলিমদের নামাজিদের কেউ ব্যঘাত সৃষ্টি করেনি। দেওয়ালের অপর পিঠে অবস্থিত মন্দিরের পুরোহিত ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মসজিদের কমিটির লোকজনের সঙ্গে সুমধুর সম্পর্ক বিরাজ করছে।

সার্বজনীন বিষ্ণুমন্দিরের পূজারী তৃপ্তি রানী রায় (৬৬) ও উজ্জ্বল চন্দ্র রায় (৪৫) বলেন, তিনি ৪০ বছর ধরে এই মন্দিরে পূজা আর্চনার কাজ করে আসছেন। কোনো দিন কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। বরং এলাকার মুসলিমরা তাদের সহযোগিতা করে থাকেন। মন্দিরের পূজারী ও মসজিদের সমন্বয়ের মাধ্যমে চলে হিন্দুদের পূজা-পার্বণ।

মসজিদের সদস্য তুহিন ইসলাম বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাঝে ধর্মীয় সহাবস্থানের মাধ্যমে উভয়ের ধর্মের কার্যাদি পালন করে যাচ্ছি।

বীরগঞ্জ উপজেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মহেশ চন্দ্র রায় বলেন, এক দেওয়ালের এপিঠ ওপিঠ দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থাকলেও আমাদের মাঝে কোনো বিরোধ নেই। উভয়ে উভয়কে সহযোগিতার মাধ্যমে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকি। এছাড়া উপজেলার কোথাও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি। আমরা হিন্দু-মুসলিম সামাজিক সহাবস্থানে বসবাস করে আসছি।

বীরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর গফুর বলেন, হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরল মেলবন্ধন দেখে তিনি অভিভূত। ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রতিবেশীদের কথায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে ভবিষ্যতেও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2009-2022 bddhaka.com  # গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত # এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Theme Developed BY ThemesBazar.Com