বিনোদন নিউজ : টানা ১৮ দিন ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন বাংলাদেশের নায়ক-সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। এতোদিন অসাড় অবস্থায় থাকলেও বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) থেকে মাঝে মাঝে সাড়া দিচ্ছেন মিয়াভাই-খ্যাত ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই অভিভাবক। স্বস্তির খবরটি জানালেন তার ছেলে রোশান হোসেন পাঠান।
তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘বুধবার (৭ এপ্রিল) থেকে উনার শারীরিক অবস্থা একটু ভালো। আমরা ডাকলে সাড়া দিচ্ছেন, হাত নাড়ার চেষ্টা করছেন। এটাই আমাদের জন্য অনেক স্বস্তির বিষয়।’
রোশান হোসেন পাঠান বলেন, বাবাকে নিয়ে কোনও ধরনের গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ করছি। গত দুই দিনে বাবার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনা উন্নতি হয়েছে। এখন তার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।
সবার কাছে দোয়া চেয়ে রোশান বলেন, আব্বুর জন্য দোয়া করবেন সবাই৷ আল্লাহ যেন আবার তাকে আমাদের মধ্যে ফিরিয়ে দেন।
ফারুকের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে থাকা স্ত্রী ফারহানা পাঠান বলেন, মানুষের মৃত্যু নিয়ে রসিকতা ঠিক নয়৷ আল্লাহর রহমতে আপনাদের মিয়াভাই এখনো বেঁচে আছেন। ভালো আছেন।
রক্তে ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় গত ২১ মার্চ থেকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন ফারুক। সেখানে ডাক্তার লি’র অধীনে চিকিৎসা চলছে এ অভিনেতার।
এর আগে, ১৫ মার্চ খিচুনি হওয়ার পর ফারুকের মস্তিষ্কে একটি সিজার করা হয়েছিল। তারপর তার নড়াচড়া এবং কথা বলা সীমিত হয়ে পড়েছিল। এরপর আইসিইউতে পাঠানো হয়। ১৮ মার্চ অবস্থার উন্নতি হলে কেবিনে পাঠানো হয়।
গত বছরের নভেম্বরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের এই সংসদ সদস্য।
২১ মার্চ অচেতন হয়ে পড়লে আবারও আইসিইউতে পাঠানো হয় এ অভিনেতা ও সাংসদকে। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন ফারুক। সবশেষ তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। নিয়মিত চেকআপের জন্য স্ত্রীসহ ৪ মার্চ সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন এই নায়ক-প্রযোজক-অভিনেতা-মুক্তিযোদ্ধা।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে ঢাকাই সিনেমার তার অভিষেক হয়। এরপর ‘লাঠিয়াল’, ‘সুজন সখী’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সাহেব’, ‘আলোর মিছিল’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘মিয়া ভাই’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
ফারুক ১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ সিনেমা জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এছাড়া ২০১৬ সালে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।