গত বছরের ২২ জানুয়ারি বেনাপোল সীমান্তের আলোচিত হত্যার ঘটনা ছিল বিজিবি সৈনিক রহিসউদ্দীন হত্যাকাণ্ড। সবশেষ গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বেনাপোলের পুটখালী সীমান্তে একই দিনে তিন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে নির্যাতনের পর হাত,পায়ের শিরা কেটে হত্যা করে বিএসএফ। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এসব হত্যাকাণ্ডের আজ পর্যন্ত একটিরও বিচার হয়নি৷ নিহতের পরিবারের সদস্যরা অনেকেই উপার্জনক্ষম মানুষদের হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ‘মাথা উঁচু করে সীমান্ত হত্যার কড়া জবাব দিতে না পারলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
গত ১৫ বছরে শার্শা-বেনাপোল সীমান্তে হত্যার শিকার বাংলাদেশিরা হলেন, শরীফ,রাজা,শওকত, আলমঙ্গীর,জয় শিকদার,রাশেদুল ইসলাম,আব্দুল জলিল,ঈসরাফিল,মাখন মজনু,বাতেন আহম্মেদ,তরিকুল ইসলাম,মনির হোসেন,আশানুর রহমান,সফিয়ার,আমির, গফ্ফার,মজনু,
হাবিব,লিটন,সবুজ,আহম্মেদ,সাদ্দাম, সমীর,আলাউদ্দীন,হজরত,মনির,হানেফ আলী,শাহিনুর রহমান,রিয়াজুল মোড়ল,শরিফুল ইসলাম,বিজিবি সদস্য রইচউদ্দীন,শাবু হোসেন,জাঙ্গীর আলম,শাকিবুর রহমান এবং অজ্ঞাত ৬ বাংলাদেশি।
নিহত বিজিবি সদস্য রইচউদ্দীনের শ্বশুর আবুল কালাম জানান, বিএসএফের গুলিতে তার জামাইয়ের নির্মম মৃত্যু আশা করেননি। এক বছর পেরিয়ে গেলেও হত্যার বিচার হয়নি। নতুন সরকারের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
মানবাধিকার সংস্থা, রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এসব অমানবিক হত্যার কড়া জবাব না দিলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর শাখার আহ্বায়ক রাশেদ খান জানান, ভারতকে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে আমরা বন্ধু দেশ মনে করি। তবে তারা তারা আমাদেরকে সে সম্মান দেয় না। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্য মতে গত ১৫ বছরে সারাদেশে বিএসএফের নির্যাতনে ৫৮৮ বাংলাদেশি হত্যার শিকার হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছে আরো কয়েক শতাধিক। কঠোর ভাবে প্রতিবাদ না জানানোয় এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ধারার পরিবর্তন আনবেন আশা রাখছি।
যশোর ৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে,কর্নেল সাইফুল্লাহ ছিদ্দিকী জানান, বিজিবি সৈনিক রইচউদ্দীন নিহতের ঘটনায় বিচার চলমান রয়েছে। সে সময় এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। সীমান্ত হত্যা বা সাধারণ মানুষের অনুপ্রবেশ রোধে নিয়মিত সীমান্তে সচেতন মুলক প্রচার-প্রচারণা সব সময় চালানো হচ্ছে। বিজিবির পক্ষ থেকে টহল জোরদার করা হয়েছে। একমাত্র সবার সচেতনতাই আগামীতে সীমান্ত হত্যা বা যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পারে।